নানা অভিযোগ। বিরোধীদের চিল চিৎকার। মামলার ঘনঘটা। কিন্তু দিনের শেষে গ্রাম বাংলায় অপ্রতিহত দাপট বজায় থাকল তৃণমূল কংগ্রেসেরই। হিসাবে বলছে, রাজ্যের ২০টি জেলা পরিষদের ২০টিই শাসকদলের দখলে। এর মধ্যে ৯টিতে বিরোধীরা একটি আসনও জেতেনি। ব্যত্যয় নেই গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতিতেও। মোট ২৫৪টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে তৃণমূলের দখলে ২৪২টি পঞ্চায়েত সমিতি। গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে ২,৬৩৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে। বিজেপির দখলে ২২০টি। ত্রিশঙ্কু ২০৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত।
এতো গেল শুধু আসনের সংখ্যা। ভোটের হারের যে হিসাব পাওয়া যাচ্ছে, সেটা আরও চমকপ্রদ। এবং তাতেও নিরঙ্কুশ প্রাধান্য তৃণমূলেরই। বিধানসভা নির্বাচনের থেকেও গ্রামের ভোটে সমর্থন বেড়েছে শাসকদলের। এখনও পর্যন্ত পাওয়া হিসাব অনুযায়ী, ৫১.১৪ শতাংশ ভোট পেয়েছে শাসক দল। অর্থাৎ গ্রাম বাংলার অর্ধেকের বেশি মানুষের সমর্থন তৃণমূলের দিকে। বিজেপি নেমেছে ২২.৮৮ শতাংশে। গত বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় যা প্রায় ১৫ শতাংশ কম। দল হিসাবে বিজেপিই দ্বিতীয়। যদিও এই দ্বিতীয় স্থানটি আবার দাবি করছে বাম-কংগ্রেস জোটও।
নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, পঞ্চায়েতে সিপিএম পেয়েছে ১২.৫৬ শতাংশ ভোট। তাদের জোটসঙ্গী কংগ্রেসের হাল আরও শোচনীয়, ঝুলিতে ৬.৪২ শতাংশ ভোট। যদিও গত বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় এই সংখ্যাটা অনেকটাই বেশি। এর সঙ্গে আইএসএফের ভোট যোগ করলে এবার জোটের ভোট বেড়ে ২১ শতাংশ হবে।
রাজ্য সিপিএমের তরফে দাবি করা হয়েছে, একুশের বিধানসভা ভোটের থেকে এবার পঞ্চায়েতে তাদের ১১ শতাংশ ভোট বৃদ্ধি পেয়েছে। একুশের ভোটে সিপিএম-কংগ্রেস-আইএসএফের মিলিত প্রাপ্ত ভোট ছিল ১০ শতাংশ। সেটা এবার ২১। বিজেপির থেকে সামান্য কম। তবে বাম সমর্থিত নির্দল এবং অন্য বাম শরিকগুলির ভোট যোগ করলে সেটা বিজেপিকে টপকে যাবে বলেই দাবি বাম শিবিরের। যদিও পঞ্চায়েতে অনেক ক্ষেত্রেই বাম এবং কংগ্রেস জোট ভুলে সরাসরি লড়াই করেছে বাম ও কংগ্রেস।