সাম্প্রতিক কালে বারবারই বঙ্গভঙ্গের দাবি তুলে রাজ্যে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করে গিয়েছে বিজেপি। কখনও পৃথক উত্তরবঙ্গ, কখনও গোর্খাল্যান্ড, আবার কখনও আলাদা কামতাপুর রাজ্যের দাবি তুলে যেমন বারবার উত্তরবঙ্গের মাটিতে আঁচ বাড়াতে চেয়েছে তারা, তেমনি জঙ্গলমহলকেও ভাঙার চেষ্টায় কোনও কসুর রাখেনি। কিন্তু পঞ্চায়েতের ফলেই স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলল যে সাধারণ মানুষ বাংলা ভাগ চায় না। দিনকয়েক আগেই নিশীথ প্রমাণিকের প্রশংসা করেছিলেন কেএলও জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রধান জীবন সিং। দেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নিয়ে কথা বলছেন একজন জঙ্গিনেতা, তা ভালভাবে নেয়নি আম জনতা। যার ফলে গ্রামবাংলা রইল তৃণমূলের হাতেই। দুই-তৃতীয়াংশের বেশি গ্রাম পঞ্চায়েত দখলে রেখেছে শাসক দল।
কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, তৃণমূল ৫২.২২ শতাংশ ভোট পেয়েছে। প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লক্ষ ৫৪ হাজার ৭৫৫। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির প্রাপ্ত ভোটের হার ২২.৬৯ শতাংশ। তারা ৫৬ লক্ষ ৭২ হাজার ৭১৩টি ভোট পেয়েছে। সিপিএম এককভাবে পেয়েছে ৩১ লক্ষ ৩৩ হাজার ৯৩৩টি ভোট, অর্থাৎ ১২.৫৪ শতাংশ। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ছিল ৩৭.৯৭ শতাংশ। গ্রামবাংলার রায়ে স্পষ্ট হয়েছে, রাজ্যভাগের রাজনীতিকে মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলের জনাদেশ তৃণমূলের পক্ষে গিয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, উত্তরবঙ্গকে ভাগ করার দাবি ও হাওয়া তুলে বিধানসভা ভোটে ফায়দা তুলেছিল বিজেপি। পঞ্চায়েতের জনাদেশ বঙ্গভঙ্গের সেই চক্রান্তকেই নস্যাৎ করেছে। বাংলা প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাভাগের প্রস্তাবকদের। জঙ্গলমহলের সমর্থনও এসেছে তৃণমূলের দিকে।