নতুন পদক্ষেপের পথে হাঁটল কলকাতা পুলিশ। সাধারণত দীর্ঘদিন ধরেই দেখা যায়, খুন করে দেহ জলে ডুবিয়ে তা লোপাট করে দেওয়ার চেষ্টা করে অপরাধীরা। সেই সব ক্ষেত্রে ডুবুরি নামিয়ে জলের নীচে দেহ খুঁজতে বিস্তর ঝামেলা পোহাতে হয় পুলিশকে। পাশাপাশি নদীতে বা জলাশয়ে কেউ ডুবে গেলে বা কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে দ্রুত দেহ অনুসন্ধানের কাজেও সমস্যায় পড়তে হয় উদ্ধারকারীদের। এবার সেই সব সমস্যার সমাধানের জন্য কলকাতা পুলিশ ‘আন্ডার ওয়াটার ড্রোন’ কিনতে চলেছে। জলের ৩৩০ ফুট নীচে পর্যন্ত পৌঁছে ছবি আর ভিডিও তুলতে পারবে এটি। জলের নীচে এই ড্রোন অবশ্য আদতে ‘রিমোট অপারেটেড ভেহিকল’। কলকাতার পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েলের নির্দেশেই এটি কেনার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
এবিষয়ে জানা গিয়েছে, এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পিছনে রয়েছে একটি বিশেষ ঘটনা। চলতি বছরের গত ৩রা মার্চ ট্যাংরায় নৃশংস কায়দায় খুন হন ঝুন্নু রানা। প্রমাণ লোপাট করতেই, আততায়ী ঝুন্নুর দেহ একটি নীল রঙের ড্রামে ভরে সায়েন্স সিটির কাছে আম্বেদকর ব্রিজের নীচ দিয়ে বয়ে চলা খালে ফেলে দেয়। প্রথমে জানা না গেলেও, পরে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে ১৬ই মার্চ বিকেল থেকে ঝুন্নুর দেহের খোঁজে ওই খালে তল্লাশিতে নামে পুলিশ। এই তল্লাশি অভিযানে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ডুবুরি, স্পিডবোট, কলকাতা পুলিশের হাতে থাকা সাধারণ ড্রোন সবই ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়। একটা সময় গোয়েন্দা ধরেই নিয়েছিলেন, ঝুন্নুর দেহের হদিশ মিলবে না। সেই মতো নিখোঁজ হওয়ার আগে ঝুন্নুকে যার সঙ্গে শেষবার দেখা গিয়েছিল, সিসিটিভি ফুটেজে তার গতিবিধিকে হাতিয়ার করেই মামলা সাজানোর প্রস্তুতিও শুরু হয়ে যায়। টানা পাঁচদিনের তল্লাশি শেষে ২১শে মার্চ চৌবাগার কাছে ওই খাল থেকেই ড্রামবন্দি ঝুন্নুর দেহ উদ্ধার হয়। আগামী দিনে কলকাতায় এমন ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে দেহ উদ্ধারে যাতে নাকাল হতে না হয়, তার জন্যই এমন ড্রোন কেনার পরিকল্পনা নিয়েছে লালবাজার। পাশাপাশি, যাত্রীবাহী নৌকাডুবির মতো ঘটনা ঘটলেও এই ড্রোন ব্যবহার করা যাবে বলে জানিয়েছে সূত্র।