তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিভিন্ন শিল্প সংস্থার তরফে অমীমাংসিত কর বিভিন্ন ট্রাইব্যুনাল বা কোর্টে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। সেগুলির নিষ্পত্তির জন্য ৩০শে জুন পর্যন্ত সুযোগ দিয়েছিল রাজ্য। বকেয়া ট্যাক্স, সুদ, পেনাল্টি, লেট ফি প্রভৃতির মীমাংসার জন্য নামমাত্র টাকা মেটানোর সুযোগ পেয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। সেই সময়সীমা আরও একমাস বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার। রাজ্যের শিল্প সংগঠন ও বণিকসভাগুলির তরফে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সেই আর্জি গিয়েছিল। সেইমতোই ৩১শে জুলাই পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। চলতি বছরের ১লা এপ্রিল প্রকল্পটি চালু হয়। প্রথম আড়াই মাসেই ১২ হাজার সংস্থা এই প্রকল্পের সুযোগ নিয়েছে বলে দাবি করেছেন রাজ্যের অর্থদফতরের আধিকারিকেরা।
জিএসটি চালুর আগে কর সংক্রান্ত যেসব বিরোধ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে এবং নিষ্পত্তি হয়নি, সেগুলির বকেয়া করের ১৫ শতাংশ মেটালে সংস্থাগুলি তাদের আর্থিক বিবরণী আরও অনেক বেশি স্বচ্ছ রাখতে পারবে বলে জানিয়ে রাজ্য সরকার এই প্রকল্প চালু করেছিল। সেই মতন বলা হয় – ভ্যাট, সিএসটি, সেলস ট্যাক্স সংক্রান্ত বিরোধের মীমাংসা করা যাবে ১৫ শতাংশ কর মিটিয়ে। এক্ষেত্রে ট্যাক্স, সুদ, পেনাল্টি, লেট ফি বাবদ যেটুকু বকেয়া আছে, সেখানেও ১০০ শতাংশ রেহাইয়ের সুযোগ পাবেন করদাতারা। এন্ট্রি ট্যাক্সের ক্ষেত্রে বকেয়া করের ৫০ শতাংশ মেটালেই মীমাংসা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে পেনাল্টি ও অন্যান্য বকেয়া দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ট্রান্সপোর্ট সংস্থাগুলিও রাজ্য সরকারের এই স্কিমের আওতায় আসতে পারবে। সেক্ষেত্রে কর বকেয়া রাখার জন্য যে পেনাল্টি দেওয়ার কথা, তার ২ শতাংশ বা ১৫ হাজার টাকা, দুইয়ের মধ্যে যেটি কম, সেটুকু মিটিয়ে দিলেই হবে। উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ বাংলার শিল্প ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলিকে যে অনেকটাই আর্থিক রেহাই দেবে সে নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, গত অর্থবর্ষ পর্যন্ত বিভিন্ন কোর্ট ও ট্রাইব্যুনালে ২৫ হাজার মামলা ঝুলেছিল। যে সব শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সেই সব মামলায় জড়িয়েছিল তাদেরই এই সুযোগ করে দেয় রাজ্য সরকার। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে দেখা যায় প্রথম আড়াই মাসেই রাজ্যের ১২ হাজার ক্ষদ্র ও মাঝারি শিল্প তথা বাণিজ্যিক সংস্থা এই প্রকল্পের সুযোগ নিয়ে আর্থিক বিবাদ মিটিয়ে নিয়েছে। আর তার ১০০ কোটিরও বেশি টাকা এসেছে রাজ্যের কোষাগারে।