শনিবার সম্পন্ন হয়েছে বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এ নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে অবাধ শান্তিপূর্ণ ভোটের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কার্যক্ষেত্রে অবশ্য বিপরীত চিত্র ধরা পড়ল। দিনভর বহু বুথে দেখাই মিলল না কেন্দ্রীয় বাহিনীর! পুরো ঘটনার নেপথ্যে গভীর ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে শাসকদল তৃণমূল। এদিন সন্ধেয় তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক থেকে দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের প্রশ্ন, “বাহিনী এসে পৌঁছল না কেন, তাহলে কি সরকারের রিজার্ভ ফোর্সই শূন্য?” ভোটে বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তাই প্রয়োজনীয় সংখ্যক বাহিনী কী কারণে এসে পৌঁছল না, সেটাও তদন্তে করে দেখার দাবি জানিয়েছেন তিনি। কুণালের কথায়, “দেশের রিজার্ভ ফোর্স কোথায় গেল? নাকি কমে আসছে! নাকি নতুন করে রিক্রুট করা হচ্ছে না। আমরা চাই, কেন বাহিনী এল না সেটা তদন্ত করে দেখা দরকার। আমরা সেই দাবি জানাচ্ছি।” তৃণমূল এই বিষয়ে আদালতের দ্বারস্থ হবে কিনা, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি কুণাল। তবে বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। “ঈশ্বর না করুক, এক সঙ্গে তিন চারটে রাজ্যে গোলমাল বেঁধে গেলে, ফোর্স পাঠাতে হলে তাহলে কি পাকিস্তান সীমান্ত থেকেও ফোর্স তুলে আনা হবে?”, প্রশ্ন তৃণমূল মুখপাত্রের।
পাশাপাশি মন্ত্রী শশী পাঁজার কথায়, “সেন্ট্রাল ফোর্স নিয়ে আমাদেরও তো প্রশ্ন রয়েছে। তাহলে কি সবটাই পরিকল্পিত ছিল? বাহিনী চাওয়া হবে, কিন্তু পাঠানো হবে না। যাতে ভোটের পুরো সিস্টেমটা গোলমাল হয়ে যায়। তারপর টার্গেট করে হত্যা করে রাজ্যের বদনাম করা হবে!” তৃণমূলের দাবি, মোট ৬১ হাজার ৫৩৯ টি বুথের মধ্যে সাকুল্যে ৬০ টি বুথে গোলমাল হয়েছে। গোলমালের হার শতকরা ০.০০০৯৭ শতাংশ। অর্থাৎ ১ শতাংশও নয়। পার্সেন্টেজই বলে দিচ্ছে, কমিশন সফল না ব্যর্থ। কুণালের কথায়, “বিরোধীরা কিছু প্রাণের বিনিময়ে বাংলাকে কলুষিত করার চেষ্টা করল। ওরা আইনশৃঙ্খলাকে টার্গেট করতে গিয়ে কিছু মানুষকে খুন করল।” কমিশন প্রসঙ্গে বিরোধীদের আনা ব্যর্থতার প্রসঙ্গে দেশের প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী হত্যার প্রসঙ্গও টেনেছে তৃণমূল। মনে টার্গেট করে হত্যা করা হলে, কোনও নিরাপত্তাই যথেষ্ট নয়, তেমনটাই মনে করিয়ে দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল।