মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বারবার বাংলার প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ করে আসছে কেন্দ্র। আর একুশের বিধানসভা নির্বাচনে গোহারা হারের পর তো পদে পদে বাংলা এবং বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করার পথে হেঁটে চলেছে গেরুয়া শিবির। রাজ্যের মানুষের প্রাপ্য ১০০ দিনের কাজের টাকাও আটকে রেখেছে তাদের সরকার। শুধু তাই নয়, নতুন করে সেই কাজের বরাত দেওয়াও বন্ধ। যেখানে এই টাকার ওপরেই নির্ভরশীল ছিল গ্রাম বাংলার খেটে খাওয়া গরিব মানুষের একাংশ। তবে তা সত্ত্বেও গ্রামের প্রান্তিক মানুষের মাথাপিছু খরচ বেড়েছে। সুখে স্বচ্ছন্দে জীবনযাপন করছেন তাঁরা। সৌজন্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’। এমনই তথ্য উঠে এসেছে রাজা নরেন্দ্রলাল খান মহিলা মহাবিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের ক্ষেত্র সমীক্ষায়।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা রাজা নরেন্দ্রলাল খান মহিলা মহাবিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক প্রভাতকুমার শীটের তত্ত্বাবধানে সমীক্ষক দলটি গত ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসে সমীক্ষা চালিয়েছিল জঙ্গলমহলের বুকে। মূলত পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম এই দুই জেলায় সমীক্ষা চালানো হয়। সেই সমীক্ষাতেই উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। দুই জেলার ২২০টি গ্রামের ৩২০০টি পরিবারের ওপর সমীক্ষা করা হয়েছিল। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল জঙ্গলমহল অঞ্চলে সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকা, জঙ্গলের ওপর নির্ভরশীলতা ও সরকারি সুযোগ-সুবিধার প্রভাব। বিশেষ করে ১০০ দিনের কাজ ও ‘লক্ষী ভাণ্ডার’র সুফল নিয়ে।
সমীক্ষার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ৪০ শতাংশ সাধারণ মানুষের সংসারে চলত ১০০ দিনের কাজের টাকায়। কিন্তু গত প্রায় দেড় বছর কোনও কাজ পাননি বাসিন্দারা। সেই ক্ষতে প্রলেপ দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’। উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে মাসে সাধারণ পরিবারের মহিলারা ৫০০ এবং আদিবাসী ও তফসিলিরা ১ হাজার টাকা করে পাচ্ছেন। সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, অভাবের সংসারে ১ হাজার টাকার ক্রয়ক্ষমতা অনেক। সমীক্ষকদের দাবি, আগে জঙ্গলমহলের মানুষের মাথাপিছু মাসিক ব্যয় ছিল ১৭৮৪টাকা। এখন ১০-১২ শতাংশ বেড়ে ১৯৪০ টাকা হয়েছে। খরচের উৎস খুঁজতে গিয়ে দেখাঁ যাচ্ছে, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যা গ্রামাঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক।