ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলার প্রতি দুয়োরানিসুলভ আচরণ অব্যাহত রেখেছে মোদী সরকার। নানান সময় কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার হয়েছে এই রাজ্য। যা নিয়ে উঠেছে বিতর্কের ঝড়। এবারেও সেই বঞ্চনার ধারাবাহিকতা বহাল রইল। উল্লেখ্য, বহুদিন হল বাংলার মানুষদের জন্য আবাস যোজনার টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে মোদী সরকার। এর মধ্যেই সামনে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। নিয়মমাফিক কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের পাবলিক ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে নাম উঠলে তবেই উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কেন্দ্রীয় আবাস যোজনার টাকা ঢোকে। কিন্তু রাজ্যের প্রায় ৭ লক্ষ কেন্দ্রীয় আবাস উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সেই টাকা না ঢোকায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকে চিঠি লিখেছিল নবান্ন। সেই চিঠির জবাব এসেছে। কিন্তু যা জবাব এসেছে, তা দেখে চোখ কপালে উঠেছে নবান্নের আধিকারিকদের। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক জানিয়েছে এই ৭ লক্ষ আবাস উপভোক্তার নাম পিএফএমএস পোর্টালে নাকি নথিভুক্তিই হয়নি! যা ঘিরেই তুঙ্গে শোরগোল। কেন্দ্রের দুটি আবাস যোজনা রয়েছে। একটি হল প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনা এবং অপরটি হল প্রধানমন্ত্রী নগর আবাস যোজনা। এর মধ্যে বাংলার টাকা আটকে আছে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনা প্রকল্পের ক্ষেত্রে। সেই প্রকল্প চালায় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। সেই প্রকল্পের যাবতীয় শর্ত মেনেই আবাস প্রকল্পের যাচাইয়ের কাজ রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের নজরদারিতে সম্পন্ন করেছে বাংলার প্রতিটি জেলা প্রশাসন। আর তার তথ্যই তুলে দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় গ্রামন্নোয়ন মন্ত্রকের পোর্টালে।
প্রসঙ্গত, এই তথ্যগুলি নিয়মমাফিক পৌঁছে যাওয়ার কথা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকে। কিন্তু তা যায়নি। সে কারণেই বাংলার ৭ লক্ষ কেন্দ্রীয় আবাস উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বাড়ি তৈরির জন্য কানা কড়িও ঢোকেনি। এখন এই ৭ লক্ষ মানুষের এই প্রকল্পের টাকা পাওয়া নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক এখন এই ৭ লক্ষ উপভোক্তার তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কাছ থেকে। নবান্নের আধিকারিকেদের একাংশ মনে করছেন, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক ও কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সমন্বয়ের অভাবেই এই ঘটনা ঘটেছে। কেউ মনে করছেন, বাংলার এই ৭ লক্ষ আবাস উপভোক্তার তথ্য আর গ্রামন্নোয়ন মন্ত্রকের কাছ থেকে পাওয়া যাবে না বুঝতে পেরেই সরাসরি রাজ্যের দ্বারস্থ হয়েছে মোদী সরকার। অনেকে মনে করছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণতার বশবর্তী হয়ে বঙ্গ বিজেপির নেতারাই কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে এই ৭ লক্ষ মানুষের নাম ইচ্ছাকৃত ভাবে বাদ দিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটিয়েছেন। তবে শেষমেশ মোদী সরকারের দোষেই বাংলার মানুষরা যে বারবার দুর্ভোগের কবলে পড়ছেন, তা বলাই বাহুল্য।