মঙ্গলবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে কুয়েতের মুখোমুখি হতে চলেছে ভারত। নবমবার খেতাব জয়ের লক্ষ্যে নামবেন সুনীলরা। বর্তমানে ফিফা ক্রমতালিকায় ভারত ১০০তম স্থানে। কুয়েত রয়েছে ১৪১ নম্বরে। কিন্তু এই দুই দেশের মুখোমুখি সাক্ষাতের ফল চিন্তায় রেখেছে ভারতের সমর্থকদের। এখনও পর্যন্ত চারবার দেখা হয়েছে দু’দলের। ভারত জিতেছে মাত্র একবার। ২০০৪ সালে আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলিতে ৩-২ ব্যবধানে। হেরেছে দু’বার। সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হার ২০১০ সালে আবু ধাবিতে আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলি ম্যাচে ১-৯ গোলে। ১৯৭৮ সালে এশিয়ান গেমসেও ভারতকে ১-৬ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল কুয়েত। পর্তুগাল জাতীয় দলের প্রাক্তন ডিফেন্ডার রুই বেন্তো ২০২২ সাল থেকে কুয়েতের দায়িত্বে। চলতি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম পর্বের দ্বৈরথেই তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন রক্ষণ মজবুত করে প্রতিআক্রমণে গোল করাই লক্ষ্য কুয়েতের। বেন্তোর ভরসা হাবাদ আলদেফারি, সাবাইব আলখালদি ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গোল করে দলকে ফাইনালে তোলা আল ব্লাউসি। দ্বিতীয়ত, সুনীলকে স্বাভাবিক খেলা খেলতে না দেওয়া। ভারতের আক্রমণ রুখতে শরীরী ফুটবল খেলা। ফলে আগের ম্যাচে বারবারই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। লাল কার্ড দেখেছিলেন ভারতের কোচ ইগর স্তিমাচ ও স্ট্রাইকার রহিম আলি। কুয়েতের হামাদ আলকোয়ালাফকেও মাঠ থেকে বার করে দিয়েছিলেন রেফারি। মঙ্গলবার সাফ ফাইনালেও যে কুয়েত একই রণকৌশল নিয়ে নামবে তা খুব ভাল করেই জানেন ইগর। এই কারণেই রবিবার তিনি গোপন অনুশীলন করিয়েছিলেন। কুয়েতের পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে আগ্রাসী রণকৌশলেই আস্থা রাখছে ভারত।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নির্বাসিত থাকায় ফাইনালেও থাকবেন নইগর। বেঙ্গালুরুতে সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে সহকারী কোচ মহেশ গাউলি খোলাখুলি বললেন, ‘‘কুয়েতের বিরুদ্ধে আগের সাক্ষাতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। লেবানন ম্যাচেও একই ঘটনা ঘটেছিল। ছেলেদের বলেছি মাথা ঠান্ডা রেখে মনঃসংযোগ করতে। কুয়েত শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। ফলে জেতা সহজ হবে না। আমাদের কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে। তা ছাড়া আমি মনে করি এই ম্যাচটা সম্পূর্ণ আলাদা হবে।’’ ভারতীয় শিবিরের খবর, সুনীল যাতে চাপমুক্ত হয়ে খেলতে পারেন তার জন্য অনিরুদ্ধ থাপা, লালিয়ানজুয়ালা ছাংতে, সাহাল আব্দুল সামাদদের বাড়তি দায়িত্ব নিতে বলেছেন ইগর। পাশাপাশি, আলখালদি ও আল ব্লাউসিকে কড়া নজরে রাখার দায়িত্ব দিতে পারেন নির্বাসনমুক্ত হয়ে ফেরা সন্দেশ জিঙ্ঘনের উপরে। এর পরেই ইগরের বক্তব্য, ‘‘এই ম্যাচে শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা হবে। তবে আমরা যে ভাবে ওদের চাপে রাখব এবং আক্রমণে উঠব, কুয়েতের পক্ষে তার মোকাবিলা করা সহজ হবে না। কারণ অনুশীলনে ছেলেদের খেলায় তীব্রতার পাশাপাশি আগ্রাসনও থাকছে। ফাইনালের জন্য আমরা তৈরি।’’ প্রসঙ্গত, সাফ অন্তর্ভুক্ত দেশ না হলেও কুয়েত এই প্রতিযোগিতায় খেলছে আমন্ত্রিত হিসেবে। ভারতের মতোই দুরন্ত ছন্দে রয়েছেন আলখালদিরা। শেষ আটটি ম্যাচের একটিতেও হারেনি কুয়েত। ভারতকে হারিয়ে অভিযেকে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিততে মরিয়া রুই। “ভারতের বিরুদ্ধে আগের ম্যাচটা কঠিন ছিল ঠিকই। আমার দীর্ঘ কোচিং অভিজ্ঞতা বলছে, ফাইনাল সব সময়ই আলাদা’’, জানিয়েছেন কুয়েতের কোচ।