বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর বাংলার মহিলাদের আস্থাই এখন রাজ্যের বিরোধীদের কাছে বড় মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, সবুজসাথী, বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা চালু করে বাংলার অগ্নিকন্যা শুধু যে বাংলার নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলেছেন তাই নয়, কার্যত তাঁদের আস্থাও অর্জন করেছে। সেই আস্থার জেরেই চলতি পঞ্চায়েত নির্বাচন হোক কী আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচন, কোনও কিছুকেই পরোয়া করছে না তৃণমূল কংগ্রেস।
নানান সমীক্ষা একথাও জানিয়েছে, রাজ্যের আর্থসামাজিক প্রকল্পগুলির দৌলতে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলার অর্থনীতিও। বিরোধীরা এই সব আর্থসামাজিক প্রকল্পগুলিকে নিয়ে যতই ঠাট্টা, তামাশা, সমালোচনা, বিরোধিতা করুক না কেন, এই সব আর্থসামাজিক প্রকল্পের অর্থ বাংলার আমজনতার ক্রয় ক্ষমতা বাড়িয়েছে। তাঁদের হাত ধরেই ফের রাজ্যের বাজারেই ফিরে আসছে সেই টাকা যা রাজ্যের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রেখেছে।
গত বিধানসভা ভোটের আগে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিরঙ্কুশ জয়ের পর সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করে রাজ্য সরকার। বিগত ২৩ মাস ধরে এই প্রকল্পে রাজ্যের মহিলারা মাসে ৫০০ বা ১০০০ টাকা করে পাচ্ছেন। রাজ্যে এখন জোর কদমে চলছে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার। তার আগে শাসক-বিরোধী সব পক্ষের বক্তব্যেই ঘুরেফিরে আসছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রসঙ্গ।
বিভিন্ন সময় এই প্রকল্পকে ব্যঙ্গ বা সমালোচনায় বিঁধলেও ভোটের মুখে বাম ও গেরুয়া শিবির উল্টে এই প্রকল্পে অর্থসাহায্য বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই প্রতিশ্রুতি দিতে তাঁরা একপ্রকার বাধ্য হচ্ছে। কারণ, চড়া মূল্যবৃদ্ধির বাজারে নিম্নবিত্তদের সংসার চালাতে এই ৫০০ বা ১০০০ টাকাও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চালুর পর এই প্রথম রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। ভোটারদের একটা বড় অংশ এই প্রকল্পের উপভোক্তা। তাই তাদের ভোটবাক্সে এই প্রকল্পের ইতিবাচক প্রভাবই প্রতিফলিত হবে বলে আশাবাদী শাসক শিবির।