মণিপুরের হিংসাত্মক ঘটনাবলীকে ‘গণহত্যা’ বা ‘জেনোসাইড’ বলে আখ্যায়িত করলেন কেরলের একটি চার্চের আর্চ বিশপ বা প্রধান ধর্মযাজক। তিনি মণিপুরের ঘটনাকে ২০০২-এর গুজরাত দাঙ্গার দ্বিতীয় অধ্যায় বলেও উল্লেখ করেছেন।
কোনও হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যা বলা খুবই গুরুতর অভিযোগ। বিশেষ ধরনের হত্যাকাণ্ডকেই জেনোসাইড বা গণহত্যা বলা হয়ে থাকে। গণহত্যার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সংজ্ঞা হল, জাতিগত, বর্ণগত, ধর্মীয় বা নৃতত্ত্বীয় গোষ্ঠী হিসাবে বিবেচিত মানুষজনকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে নিকেশ করার লক্ষ্যে সংঘঠিক হত্যাকাণ্ড। গুজরাতের ২০০২-এর দাঙ্গাকে মানবাধিকার সংগঠনগুলি গণহত্যা বলে থাকে। ওই দাঙ্গায় হত্যার নিশানা করা হয়েছিল মুসলিমদের। একইভাবে মণিপুরে খ্রিস্টানদের হত্যার জন্য টার্গেট করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার কেরলের কান্নুরে স্থানীয় চার্চের আর্চবিশপ জোসেফ প্যামপ্লানি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘মণিপুরে হিংসা এক ধরনের গণহত্যা। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার উভয়ই যা থামাতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রসঙ্গত, মণিপুরে ক্ষমতায় আছে বিজেপি। গত ৫৫ দিন ধরে রাজ্যটি জাতি সংঘাতে অশান্ত। এখনও পর্যন্ত সেখানে ১২০ জন নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা অগুনতি। এলাকা ছাড়া হাজার হাজার পরিবার। সেখানে বিবদমান দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংখ্যাগুরু মেইতেই সম্প্রদায়ের সিংহভাগ হিন্দু। অন্যদিকে, পার্বত্য মণিপুরের বাসিন্দা কুকিরা মূলত আদিবাসী এবং তাদের বেশিরভাগ খ্রিস্টান। জাতিদাঙ্গায় বহু চার্চ আক্রান্ত হয়েছে বলে অভিযোগ।
আর্চবিশপ জোসেফ প্যামপ্লানি মণিপুর নিয়ে সরব হতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাম্প্রতিক মার্কিন সফরের প্রসঙ্গ টেনেছেন। ওই সফরে প্রধানমন্ত্রী আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে বলেন, ভারতে কোনও ধর্মীয় বৈষম্য নেই। বিশপ জোসেফের কথায়, ‘প্রধানমন্ত্রীর উচিৎ ছিল মণিপুরের মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে এই মন্তব্য করা।’