আর বেশি দেরি নেই। আগামী মাসেই রাজ্যজুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন। চলছে শেষ লগ্নের প্রস্তুতি। তবে এর মধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ফের ঘনীভূত হল জটিলতা। ভোটের জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দাবি মতো ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিতে পারছে না অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সূত্রের খবর, মণিপুর ও কাশ্মীরে প্রচুর পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ফলত বাংলায় পাঠানোর মতো পর্যাপ্ত পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী নেই মন্ত্রকের হাতে। তাছাড়া বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলি থেকে সশস্ত্র পুলিশ চেয়েও পাওয়া যায়নি। আর সেই ব্যর্থতার দায় এড়াতেই এবার অজুহাত খুঁজতে শুরু করে দিল শাহের মন্ত্রক। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার নিয়ে পরিকল্পনা জমা না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন কেন্দ্রের আইনজীবী। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে তিন দফায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি দিয়ে ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে একাধিকবার চিঠি দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার পর্যন্ত মাত্র ২২ কোম্পানি বাহিনী এসেছে রাজ্যে। বুধবার আরও ৩১৫ কোম্পানি বাহিনী আসার কথা। কিন্তু বাকি ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনী নিয়ে কী হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়।
সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনীর খরচ বহন করতে হবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে। ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে যদি ১৫ দিন রাখতে হয় সেক্ষেত্রে ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকার বেশি খরচ করতে হবে। ওই খরচ বাঁচাতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী না পাঠানোর জন্য অজুহাত খুঁজতে ব্যস্ত কেন্দ্রের আইনজীবী। পাশাপাশি রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অবশ্য অভিযোগ তোলা হয়েছে, বঙ্গ বিজেপিকে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার সুযোগ করে দিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো নিয়ে ঘৃণ্য রাজনীতি করছে অমিত শাহের মন্ত্রক। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার পঞ্চায়েত ভোটের দফা বাড়ানোর দাবি তোলার পরের দিনই কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী বঙ্গ বিজেপির মুখিয়ার সুরে সুর মিলিয়ে বলেছিলেন, “২০১৩ সালের মতো কয়েক দফায় পঞ্চায়েত ভোট হলে যত বাহিনী চাওয়া হবে তা দেওয়া সম্ভব।” কিন্তু কমিশন এক দফায় নির্বাচন করানোর বিষয়ে অনড় থাকাতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো নিয়ে দীর্ঘসূত্রিতা করছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।