২০১৪ সাল থেকেই বিজেপির প্রচারের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া। সে বার নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতায় আনতে প্রচারে কোনও কসুর রাখেনি বিজেপির আইটি সেল। আগামী বছর ফের দেশে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে এবার সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সাদের দিয়ে মোদীর মন্ত্রীদের একগুচ্ছ সাক্ষাৎকারের একটি সিরিজ তৈরি করা হয়েছে। মাইগভ যৌথভাবে এ কাজে সামিল রয়েছে। সাক্ষাৎকারগুলি নিচ্ছেন জনপ্রিয়তার নিরিখে দেশের সেরা ইউটিউবাররা। কিন্তু এ কাজের খরচ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। সরকারি অর্থ অর্থাৎ জনগণের করের টাকায় কি এই বিজ্ঞাপনী প্রচার চলছে?
একই সঙ্গে প্রথম সারির সংবাদপত্রে মোদী সরকার কিছু নির্দিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, সেই সঙ্গে তাদের ইউটিউব চ্যানেলের লিংকও সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনে দেওয়া হচ্ছে। বিজ্ঞাপনে দাবি করা হচ্ছে, অনলাইনে নিরাপদ থাকতে, কেবলমাত্র সত্যিকারের বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস করুন। আদপে এই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মোদী সরকার, তাদের পছন্দের কিছু ইউটিউবারের প্রচার চালাচ্ছে, আমজনতার মাঝে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। আর তাদের দিয়েই কেন্দ্রের মন্ত্রীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছে।
রবিবার, ২৫ জুন, প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া খবর প্রকাশ করে, ২৩ জুন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল হস্তশিল্পকে জনপ্রিয় করতে এবং শিল্প সম্পর্কে গ্রাহকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে দেশের ৫০ জনেরও ইউটিউবারের সঙ্গে কথা বলেছেন। বিবেক বিন্দ্রা, গৌরব চৌধুরী (টেকনিক্যাল গুরুজি), বিরাজ শেঠ (সহ-প্রতিষ্ঠাতা, মঙ্ক এন্টারটেইনমেন্ট), গণেশ প্রসাদ (থিঙ্ক স্কুল), শ্লোক শ্রীবাস্তব (টেক বার্নার), প্রফুল্ল বিল্লোরে (এমবিএ চায়ওয়ালা) এবং অনুষ্কা রাঠোরের ( অনুষ্কা রাঠোর ফাইন্যান্স) ইউটিউবাররা এবং আরও অনেকে সেখানে ছিলেন। পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউটিউবাররা নিজেদের চ্যানেলে সরকারের বিভিন্ন নীতি, কর্মসূচি নিয়ে কনটেন্ট বানানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
ইউটিউবার রণবীর এলাহাবাদিয়া, রাজীব চন্দ্রশেখর, এস জয়শঙ্কর, পীযূষ গোয়েলের মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। মন্ত্রীরা আবার সেগুলো নিজেরাও টুইটারে প্রচার করেছেন। পডকাস্ট ইন্টারভিয়ের বিবরণ অংশে মোদী সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে, উদ্যোগের কথা লেখা হয়েছে। রাজীব চন্দ্রশেখরের ভিডিওর ডেসক্রিপশনে লেখা হচ্ছে, ‘পাবজি, টিকতক ব্যান, ক্রিপ্টোকারেন্সি, ওয়েব ৩.০, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা কথা বললাম।’ আরেকটি চ্যানেলে পীযূষ গোয়েলের সাক্ষাৎকারকে সবচেয়ে বেশি তথ্যে ঠাসা ভিডিও দাবি করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, জিওপলিটিক্সকে খুড়োর কল হিসেবে ব্যবহার করে মানুষকে জয়শঙ্করের সাক্ষাৎকার শোনানো হচ্ছে। আদপে এগুলো সবই দৃষ্টিআকর্ষণী প্রচার বই অন্য কিছু নয়। তিন মন্ত্রীর সাক্ষাৎকারের ভিডিও মাইগভ-এর সঙ্গে যৌথভাবে করা হয়েছে। উল্লেখ্য, মাইগভ হল একটি মাধ্যম, যা দেশের নাগরিক ও সরকারের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম রূপে কাজ করে। এর মাধ্যমে সরকারের কথা দেশের নাগরিকদের কাছে পৌঁছয়। এখানেই মাইগভ-এর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, সরকারি সংস্থা হয়ে তারা কেন কিছু ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও দেখানোর মাধ্যম হচ্ছেন? এতে কি টাকা ব্যয় হচ্ছে?