কথায় আছে, ‘যে মেঘ গর্জায়, সেই মেঘ বর্ষায় না’। বঙ্গ সিপিএমেরও যেন এখন সেই দশা। তাদের সমস্ত তর্জন-গর্জন যে শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়াতেই সীমাবদ্ধ, বাস্তবে যে সংগঠনের হাল শোচনীয় তা ভাল মতো টের পাচ্ছে খোদ আলিমুদ্দিনও। এমনকী শরিকি দ্বন্দ্বও লেগেই আছে বামফ্রন্টের মধ্যে। যেমন বাম শরিক সিপিএম এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের মধ্যে দ্বন্দ্ব মিটছে না কোচবিহারে। এই দ্বন্দ্ব প্রয়াত ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা কমল গুহর আমল থেকে শুরু হয়েছিল। তার পর থেকে কার্যত এই জেলায় কোন শরিকের আধিপত্য থাকবে তা নিয়ে লড়াই চলছেই। বর্তমানে তো ক্ষমতা হারিয়ে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই লড়ছে দুই দলই। তবু দ্বন্দ্বে কোনও ছেদ পড়েনি।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের আসন জেতা দূর অস্ত, একটি গ্রাম পঞ্চায়েতেও এককভাবে তারা দখল করতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খাচ্ছে বাম ঐক্য। তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ার আগে তাদের একে অপরের সঙ্গেও লড়তে হচ্ছে অন্তত জেলা পরিষদের চারটি আসনে। পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট আগেই কার্যত ভেস্তে গিয়েছিল। এবার বাম ঐক্য নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। প্রসঙ্গত, এবার গ্রাম পঞ্চায়েতের কোচবিহার জেলায় ২ হাজার ৫০৭টি আসনের মধ্যে সিপিএম এককভাবে ১ হাজার ২২৯ টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। ফরওয়ার্ড ব্লক ৩১৫ টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।
অন্যদিকে, পঞ্চায়েত সমিতির ৩৮৩ টি আসনের মধ্যে সিপিএম ২৫৩ টি এবং ফরওয়ার্ড ব্লক ৬৪ টি আসনের প্রার্থী দিয়েছে। জেলা পরিষদের মোট ৩৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূল একটি আসনে আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে। ৩৩টি আসনের মধ্যে সিপিএম ২৬টিতে এবং ফরওয়ার্ড ব্লক ১০টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। এখানে দেখা যাচ্ছে, জেলার কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা, মাথাভাঙা, সিতাই এবং মেখলিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের একটি করে জেলা পরিষদের আসন অর্থাৎ ১০, ১৫, ১৮ এবং ২০ নম্বর আসনে ফরওয়ার্ড ব্লক এবং সিপিএম উভয় পক্ষই প্রার্থী দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলার সভাপতি দীপক সরকার জানান, তাঁরা চেয়েছিলেন বামঐক্য হোক তবে সিপিএম আসন ছাড়তে চায়নি। তাই অন্তত চারটি জেলা পরিষদের আসনে উভয়পক্ষ প্রার্থী দিয়েছে।