ফের বীভৎস নৃশংসতার সাক্ষী রইল বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশ। একটি ইউক্যালিপটাস বাগানে উদ্ধার হয়েছিল নাবালিকার গলাকাটা, ক্ষতবিক্ষত, নগ্ন দেহ। মুখ এমন ভাবে ক্ষতবিক্ষত করে দেওয়া হয়েছিল যে শনাক্তও করা যাচ্ছিল না। পুলিশ মনে করেছিল, আক্রোশবশত এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে কোনও দুষ্কৃতী। কিংবা ধর্ষণের ঘটনা। কিন্তু তদন্ত খানিক গড়াতেই বেরিয়ে এল ভয়াবহ তথ্য! দুই ও চার বছরের দু’টি ভাইয়ের সামনে মেয়েটিকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে খুন করে বাবা-মা। তারপর তার পোশাক খুলে নিয়ে যাওয়া হয় যাতে সহজে পরিচয় বোঝা না যায়। ক্ষতবিক্ষত করে দেওয়া হয় মুখ, গলা। উত্তরপ্রদেশের সীতাপুর জেলার ঘটনায় আবারও প্রকাশ্যে এসেছে পরিবারের সম্মান রক্ষায় খুনের নৃশংসতা। অভিযুক্ত বাবা-মা গ্রেফতার হয়েছে। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, গত ১৭ই জুন সাদনা থানা এলাকার সাহোলি গ্রামে গলা কাটা অবস্থায় এক নাবালিকার অর্ধনগ্ন মৃতদেহ পাওয়া যায়। প্রাথমিক ভাবে দেহ শনাক্ত করা যায়নি। আন্দাজ করা যায়নি খুনের কারণ। দিন কয়েকের মধ্যেই তদন্তে সাফল্য পাওয়া যায়। জানা যায় মৃতার নাম আশিনী। অন্য কোনও দুষ্কৃতী নয়, নিজের বাবা-মা’ই তাকে খুন করেছে।
এপ্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনপি সিং জানান, আশিনী তার বাবা-মায়ের সঙ্গেই দিল্লিতে পরিচারিকার কাজ করত। সেখানেই হারদোই জেলার আত্রৌলির বাসিন্দা সর্বেশের আলাপ। এক সময় দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সর্বেশ তফসিলি জাতির। বিষয়টি জানতে পেরে আশিনীর বাবা-মা তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠে। তড়িঘড়ি মেয়েকে নিয়ে তারা ফিরে আসে সীতাপুর জেলার সাদনা থানার অন্তর্গত নিজেদের গ্রামে। কিন্তু আশিনী বাগ মানেনি। তাই গ্রামেই মেয়েকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করে পঙ্কজ ও নীতু। জানা গিয়েছে, পঙ্কজ এক আত্মীয়ের কাছ থেকে মোটরবাইক ধার করে স্ত্রী, মেয়ে ও অন্য দুই শিশুসন্তানকে ইউক্যালিপটাস বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে খুন করে রেখে যায় মেয়েকে। পুলিশ বলছে, রহস্য সমাধান করা খুব সহজ হত না, যদি না পঙ্কজের বিরুদ্ধে ওই আত্মীয় তাঁর মোটরবাইক ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ জানাতেন থানায়। এর পরেই পুলিশ পঙ্কজকে খুঁজতে শুরু করে। একের পর এক সংকেত অবলম্বন করে পুলিশ পঙ্কজ এবং নীতুকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। অবশেষে খুনের কথা কবুল করে তারা। দ্রুত রহস্য সমাধান করার জন্য তদন্তকারী দলকে ২৫ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে পুলিশ সুপারের তরফে।