গত ২ জুন উড়িষ্যার বালেশ্বরে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। যার ফলে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৩০০ যাত্রীর। দুর্ঘটনার পর থেকে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন করমণ্ডল এক্সপ্রেসের চালক গুনানিধি মোহান্তি। কিন্তু রহস্যজনকভাবে তিনি এখন ‘নিখোঁজ’। তিনি কোথায় আছেন, তা কেউ জানেন না। এই পরিস্থিতিতে ওই রেল চালকের পরিবারের অভিযোগ, গুনানিধির সঙ্গে তাঁদের দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁরাও জানেন না তিনি কোথায় আছেন। এর আগে গুনানিধির মৃত্যুর খবর প্রচার করেছিল কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। পরে জানা যায়, তিনি মারা যাননি। আহত অবস্থায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
একদিকে পরিবারের সদস্যরা বলছেন, গুনানিধি কোথায় আছেন, তাঁরা সেটা জানেন না। অন্যদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, পাঁচ দিন আগে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ট্রেনচালক গুনানিধি। তাহলে প্রশ্ন হলো, এখন তিনি কোথায় আছেন? গুনানিধির বড় ভাই রঞ্জিত মোহান্তি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘গুনানিধি কোথায় আছে, সে ব্যাপারে আমাদের কেউ কিছু বলছে না। আমি ভেবেছিলাম সে (গুনানিধি) হাসপাতালে ভর্তি আছে, কিন্তু আমি এ ব্যাপারে নিশ্চিত নই।’ গুনানিধির আরেক ভাই সঞ্জয় মোহান্তি বলেন, ‘দুর্ঘটনার কয়দিন পর আমি ভাইকে দেখতে গিয়েছিলাম। সে গুরুতর আহত হয়েছিল। কথা বলতেও পারছিল না। তাকে আইসিইউ’তে রাখা হয়েছিল। এরপর আর ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি।’
এদিকে, ট্রেনচালক গুনানিধির অবস্থানের ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাতে চাইছে না রেল কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে রেলের পূর্বাঞ্চলীয় বিভাগের জনসংযোগ অধাকারিক বিকাশ কুমার বলেন, ‘স্বাস্থ্য একজন মানুষের একদম ব্যক্তিগত বিষয়। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে একজন অসুস্থ ব্যক্তির স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে কোনো তথ্য দিতে পারি না।’ জানা গেছে, দুর্ঘটনায় গুনানিধির পাঁজরের হাড় ভেঙে গেছে। তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন। তাঁর ৮০ বছর বয়সী বাবা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘গ্রামের সবাই মনে করে ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য আমার ছেলে দায়ী। সে গত ২৭ বছর ধরে ট্রেন চালাচ্ছে। কখনোই এমন ভুল করেনি। আমি গুনানিধির সঙ্গে কথা বলিনি। ছেলের সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছি।’