এই তিনি নবান্নের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছেন, তো পরক্ষণেই বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ‘কাজের সম্পর্ক’ দারুণ! এই তাঁকে পাশে বসিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলছেন, রাজভবন-নবান্ন-বিকাশ ভবন একসঙ্গে কাজ করবে, আর ঠিক তার পরের মুহূর্তেই দেখা যাচ্ছে রাজভবন শিক্ষা দফতরের সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন চালাতে শুরু করেছে! কথা হচ্ছে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের। যিনি আক্ষরিক অর্থেই ‘বিচিত্র’।
প্রসঙ্গত, রাজ্যপাল হিসাবে বোস বাংলায় এসেছিলেন ২০২২ সালের ২২ নভেম্বর। শপথ থেকেই তিনি বিতর্কে। জুন মাসের মাঝামাঝি তাঁর মেয়াদ সবে যখন সাত মাসে পড়ছে, তখন দেখা যাচ্ছে, বিতর্ক বোসের প্রায় ‘ছায়াসঙ্গী’ হয়ে গিয়েছে। কখনও তিনি শাসকের রোষে, কখনও আবার বিরোধীদের অভিযোগের কাঠগড়ায়।
তবে শাসক তৃণমূল মনে করছে, রাজ্যপালের সমস্ত কাজই ‘ইচ্ছাকৃত এবং পরিকল্পিত’। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায়, ‘বিজেপির পাঠানো লোক হিসাবে আসল সময়ে বিজেপির কথা মতো আচরণই করেন এবং করবেন। মাঝেমধ্যে স্থিতু হয়ে বসে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলেন। কিন্তু সেটা ওঁর আসল লক্ষ্য নয়। আমি তাই প্রথম দিন থেকেই ওঁর সম্পর্কে কিছু বললে ‘এখনও পর্যন্ত’ কথাটা বলে এসেছি।’
কুণালের সংযোজন, ‘কখনও কখনও নবান্নকে সহযোগিতার ভান করলেও আসলে উনি বিজেপির লোক। সেই মতোই কাজ করেন।’ ঘটনাচক্রে, রাজ্যপালকে নিয়ে সিপিএমের বক্তব্যও মোটামুটি এক। দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানান, প্রথম থেকেই তিনি রাজ্যপালকে নিয়ে এতটাই ‘বীতশ্রদ্ধ’, যে এখনও পর্যন্ত দলের পক্ষে রাজভবনে কোনও স্মারকলিপিও দেওয়া হয়নি। এটা দলীয় সিদ্ধান্ত মেনেই।
এক বেসরকারি সংবাদ মাধ্যমের কাছে সেলিম জানিয়েছেন, ‘এই প্রথম একজন রাজ্যপাল, যাঁকে আমরা কোনও ডেপুটেশন (স্মারকলিপি) দিইনি। উনি এসে থেকেই বিখ্যাত হতে চাইছেন। আমরা সেটা কেন হতে দেব! আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, হাতেখড়ি দিয়ে শুরু করেছেন, গলায় দড়ি কবে হবে?’