কয়েক মাস আগে থেকেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন জেলায় গিয়ে তৃণমূলের মুখ কারা হবেন তার নমুনা দেখাচ্ছিলেন। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বোঝাতে চেয়েছিলেন, সৎ, নিজেরটা না ভেবে মানুষের জন্য কাজ করবেন, এমন লোককেই তৃণমূল প্রাধান্য দেবে। তারই প্রকৃত উদাহরণ যেন রাজারহাটের পাথরঘাটা পঞ্চায়েতের সদস্য রুমা বিশ্বাস। তাঁর ঘরের চালটা এখনও অ্যাসবেস্টরের। গরম কালে মনে হয় গনগনে চিমনি। সেই চাল আবার ফুটো। জল পড়ে বর্ষায়। কোনওরকমে প্লাস্টিক দিয়ে জোড়াতাপ্পি দিতে হয়। কিন্তু সেই ঘরেই স্বামী, দুই ছেলে নিয়ে থাকেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য রুমা।
প্রসঙ্গত, শহর লাগোয়া রাজারহাটের পাথরঘাটা পঞ্চায়েতের ১৫ নম্বর গ্রাম সংসদের ২৩০ নম্বর বুথ থেকে ২০১৮ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে জিতেছিলেন রুমা। এবারও তাঁকে টিকিট দিয়েছে দল। চারপাশে অনেকের যখন জীবনযাপন বদলে গিয়েছে, তখন রুমার কোনও বদল নেই। নেননি আবাস যোজনার ঘরও। বার্ধক্যভাতার তালিকায় নাম তোলেননি নিজের শ্বশুর-শাশুড়ির। সংসার সামলে পঞ্চায়েতের কাজ করা রুমার স্পষ্ট কথা, ‘আমরা মমতাদির লোক। দিদিও তো টালির চালেই থাকেন। এতে অবাক হওয়ার কী আছে!’
স্থানীয়দের বক্তব্য, আশপাশের এলাকার অনেককেই তো দেখা যাচ্ছে পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি হয়ে হৃষ্টপুষ্ট হয়েছেন। রুমা কিন্তু একই রয়ে গিয়েছেন। উল্লেখ্য, রুমার স্বামী ক্ষৌরকারের কাজ করেন। আড়াই দশকের পুরনো একটি সেলুন রয়েছে। দুই ছেলের একজন স্নাতকের পড়ুয়া, অন্যজন ক্লাস এইটের। বাড়ির রান্না করা, স্বামীকে খাবার পৌঁছনো, ছেলেদের পড়াশোনা দেখার পাশাপাশি পঞ্চায়েতের কাজেও কোনও ফাঁকি নেই রুমা। দিদিকে আদর্শ করেই এগিয়ে গিয়েছেন তিনি। এবার ফের রুমা জোড়াফুলের প্রার্থী। জয়ের ব্যাপারেও আশাবাদী তিনি।