বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসে সুজাতা মণ্ডলের তৃণমূলে যোগ দেওয়াটাই ছিল নাটকীয়। তারপর সৌমিত্রর কান্না, সুজাতার ফুঁসে ওঠা, ডিভোর্সের মামলা দায়ের এমনকী সেই বিচ্ছেদ সাঙ্গ হয়ে যাওয়া—গোটাটাই ছিল বাংলার রাজনীতির একটা মেলোড্রামাটিক এপিসোড। সেই সুজাতাকে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাঁকুড়ার ৪৪ নম্বর জেলাপরিষদ আসন থেকে টিকিট দিল তৃণমূল।
জয়পুর ব্লকের তিনটি জেলা পরিষদ আসন রয়েছে। তারমধ্যে একটিতে প্রার্থী করা হয়েছে বিজেপি সাংসদের প্রাক্তন স্ত্রীকে। এখন প্রশ্ন হল, এবার কি জিততে পারবেন সুজাতা?
একুশের বিধানসভার আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তারপর সুজাতাকে আরামবাগ বিধানসভায় প্রার্থী করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু আরামবাগে বিজেপির দাপটে হারতে হয় সুজাতাকে। শুধু ভোটে হারা নয়, নির্বাচনের দিন কার্যত কালঘাম ছুটেছিল সুজাতার। বাঁশ নিয়ে তাঁকে তাড়া করেছিল বিজেপির লোকজন। দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ মাঠের আল বেয়ে প্রাণ হাতে করে ছুটতে ছুটতে একটি গ্রামে ঢুকে কোনওরকমে সেদিন রক্ষা পেয়েছিলেন সুজাতা।
যদিও সৌমিত্রর ঘর ভেঙে তাঁর বেরিয়ে আসাকে তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে হাতিয়ার করতে চেয়েছে বারবার। বিভিন্ন জেলায় ছোট-বড় কর্মসূচিতে সুজাতা এখন তৃণমূলের অন্যতম বক্তাও বটে। কয়েক মাস আগে বাঁকুড়ায় সভা করতে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মঞ্চেও সুজাতাকে বক্তৃতা করতে দেখা গিয়েছিল। আর অভিষেক সৌমিত্রর উদ্দেশে তোপ দাগতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘ঘরের লক্ষ্মীকে সামলে রাখতে পারে না তাঁর আবার বড় বড় কথা!’
উনিশের লোকসভা ভোটের সময়ে মামলার কারণে জেলায় ঢোকার অনুমতি ছিল না সৌমিত্রর। সেই সময়ে স্বামীর হয়ে প্রচার সামলেছিলেন সুজাতাই। তারপর সেই সুজাতাই যে তৃণমূলে যোগ দেবেন কে জানত। যেদিন পুরনো তৃণমূল ভবনের মূল ফটকের সামনে সুজাতা কুণাল ঘোষের সঙ্গে গাড়ি থেকে নামছেন সেদিন দৃশ্যত হতবাক হয়েছিলেন সকলে। এখন দেখার সুজাতা জেতেন কিনা।