এবার সুন্দরবন প্রান্তিক এলাকার মানুষজনকে আরও উন্নততর চিকিৎসা পরিষেবা দিতে তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ২টি স্বাস্থ্যজেলা ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ১টি স্বাস্থ্যজেলার প্রান্তিক মানুষদের জন্য জিপিএস যুক্ত বোট ক্লিনিক চালু করবে রাজ্য স্বাস্থ্যদফতর। এই পরিষেবা চালু জন্য ইতিমধ্যেই টেন্ডার ডাকা হয়েছে। মূলত সুন্দরবনের যে সব দুর্গম জায়গায় পৌঁছনো দুষ্কর সেসব এলাকাতেই এই ভ্রাম্যমাণ জিপিএস যুক্ত বোট ক্লিনিক ঘুরবে। জেলা স্বাস্থ্যবিভাগের সঙ্গে সমন্বয় রেখে পরিষেবা প্রদান করা হবে বলেই জানিয়েছেন স্বাস্থ্যদফতরের কর্তারা। রাজ্যের যে ৩টি স্বাস্থ্য জেলায় এই পরিষেবা চালু করা হচ্ছে সেগুলি হল, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ক্যানিং ও ডায়মন্ডহারবার স্বাস্থ্য জেলা। এই ৩টি স্বাস্থ্য জেলার জন্য আপাতত মোট ৫টি জিপিএস যুক্ত বোট ক্লিনিক নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ৫টি জিপিএস যুক্ত বুট ক্লিনিকের মধ্যে ১টি থাকবে গোসাবায় যা ক্যানিং স্বাস্থ্য জেলার জন্য ব্যবহৃত হবে। ২টি থাকবে কাকদ্বীপে, যা ব্যবহৃত হবে ডায়মন্ডহারবার স্বাস্থ্য জেলার পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপ, সাগর ও নামখানা ব্লকের জন্য ব্যবহার হবে এবং ২টি থাকবে বসিরহাটে যা হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি ১ এবং ২ নম্বর ব্লকের জন্য।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই জিপিএস যুক্ত বোট ক্লিনিকের মাধ্যমে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকার মানুষদের মূলত প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হবে। জ্বর, সর্দি কাশি ছাড়াও, ক্যান্সার নির্ণয়, চক্ষুপরীক্ষা, অপুষ্টিজনিত রোগের চিকিৎসা মিলবে। এছাড়াও থাকবে মানসিক সমস্যার জন্য কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও। অনেকটা হাসপাতালের আউটডোরের মতো পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। যে ৫টি বোট নামানো হবে, তাতে জিপিএস লাগানো থাকবে। ফলে জেলার কর্তারা বোটের অবস্থান যেমন জানতে পারবেন তেমনি কোনদিন কোন বোট কোথায় পরিষেবা দিচ্ছে সেটাও তাঁরা জানতে পারবেন। এই জিপিএস যুক্ত বোট ক্লিনিকের বোটগুলি কেমন হবে, তারও একটা ছক করে দিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। কার্যত এই বোটগুলির জন্য যে টেন্ডার ডাকা হয়েছে সেখানে বলেই দেওয়া হয়েছে বোটে থাকতে হবে রোগীদের অপেক্ষা করার ঘর, বাথরুম, ডাক্তার দেখার ঘর, প্যাথলজি রুম। এই জিপিএস যুক্ত বোট ক্লিনিকের পরিষেবা দেওয়ার জন্য চিকিৎসক, ল্যাব টেকনিশিয়ান, ফার্মাসিস্টিদের নিয়োগ করা হবে। এমন পরিষেবা চালু হলে সুন্দরবনের বহু মানুষ উপকৃত হবে বলেই মনে করছে চিকিৎসক মহল।