বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই রাজ্যবাসীর জন্য একাধিক জনমুখী প্রকল্পের সূচনা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মধ্যে অন্যতম হল পথশ্রী-রাস্তাশ্রী। বহু আগেই রাজ্যে কাজ শুরু হয়েছিল এই প্রকল্পের। চলতি অর্থবর্ষের রাজ্য বাজেটেই বলে দেওয়া হয়েছিল রাজ্যে পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে ৩ হাজার কিমি রাস্তা নির্মাণ করা হবে। তার জন্য ১২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দও করা হয়। এখন জেলায় জেলায় গ্রামবাংলায় জোরকদমে চলছে পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পের সেই সব রাস্তা তৈরির কাজ। এখন নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ১ হাজার কিমি রাস্তা নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে রাজ্যে। এই কাজে রাজ্যের মধ্যে একেবারে প্রথম স্থানে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। তবে জুন মাসের মধ্যে পুরো কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হলেও, সেটা সম্ভব হবে না। পাশাপাশি, প্রতিটি রাস্তার মান যাচাই বা পরীক্ষা করেছেন আধিকারিকরা। সেই কাজ গুরুত্ব বুঝে কোথাও কোথাও একাধিকবারও কাজ হয়েছে। নবান্ন সূত্রের খবর, গ্রাম বাংলার রাস্তা তৈরির কাজের অগ্রগতি নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে জেলাগুলির সঙ্গে। কাজ, বর্ষার আগে যতটা সম্ভব সেই রাস্তা তৈরির কাজ শেষ করার জন্য বারেবারে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যের শীর্ষ প্রশাসনিক মহল। পঞ্চায়েত ভোটের আগে কত কিমি রাস্তা সংস্কার বা নির্মাণ শেষ হয়, সেদিকেই তাকিয়ে সবাই।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই প্রকল্পে রাজ্যে এখন ১০,২৬০ কিমি রাস্তার কাজ চলছে। ১,০১৪ কিমি রাস্তা সংস্কার বা নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। রাজ্যে রাস্তা তৈরি হবে ৮,৭৩৭টি। তার মধ্যে ১,৬০০’রও বেশি রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। জেলাগুলির মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তৈরি হয়েছে ৩৫০টিরও বেশি রাস্তা। সারা রাজ্যের মধ্যে এই জেলায় সবচেয়ে বেশি রাস্তার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এক আধিকারিক জানান, এখানে ২,০৭২টি রাস্তার কাজ হওয়ার কথা। তার মধ্যে ২,০২০টির ওয়ার্ক অর্ডার বেরিয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নিরিখে রাজ্যের বাদবাকি বাকি কোনও জেলায় এতটা কাজ হয়নি। পূর্ব মেদিনীপুরে ২০০’র বেশি রাস্তা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। হুগলিতে প্রায় ১৭০টি রাস্তা তৈরি হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনায় তৈরি হয়েছে ১০০’র বেশি রাস্তা। সব জেলায় পঞ্চায়েত সমিতিগুলি এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি রাস্তা তৈরি করেছে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এখনও পর্যন্ত ১৪ হাজারের বেশি রাস্তা ইনসপেকশন হয়েছে। এর মধ্যে সব রাস্তায় একাধিকবার পরীক্ষা হয়েছে। যেখানে যেখানে দেখা গিয়েছে রাস্তা নির্মাণে ত্রুটি আছে, নির্মিত হওয়া রাস্তার মান ভাল নয়, সেখানেই সেই রাস্তা নতুন করে ফের তৈরি করতে বলা হয়েছে ঠিকাদারকে। রাস্তা তৈরির কাজে মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায়ের সরকার ও প্রশাসন যে কোনওরকম দুর্নীতি ও উদাসীনতা বরদাস্ত করবে না, তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সমস্ত সব ঠিকাদারদের।