২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে দেশে জিএসটি লাগু করেছে মোদী সরকার। সেই হিসাবে চলতি বছরের জুলাই মাসেই ৬ বছর পূর্ণ হয়ে যাবে জিএসটি লাগু হওয়ার সময়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এখনও এই কর ব্যবস্থার পরিকাঠামোয় প্রচুর ফাঁক রয়ে গিয়েছে। আর এই সব ফাঁক গলেই দেশে বাড়ছে প্রতারণার কারবার ও অসাধু ব্যবসায়ীদের কারবার। যা নিয়ে বারবার কেন্দ্রকে জানিয়েও লাভ হয়নি৷ অবশেষে মোদী সরকার যা করতে পারেনি, এবার বাংলায় সেটাই করে দেখাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বাংলায় থাকা ৩৭ হাজার ভুয়ো সংস্থার জিএসটি রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দিল তারা। বিগত ১৬ মাসে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাংলার বুকে জিএসটি নিয়ে যে প্রতারণা চলছে আর তার জন্য যে রাজ্য সরকারের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে তা বহুবার রাজ্যের তরফে কেন্দ্রকে জানানো হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এই জিএসটি জালিয়াতি রুখতে বাংলার জন্য কোনও পদক্ষেপ করতেই রাজি নয় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক। তাই শেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই জালিয়াতি ঠেকাতে কোমর বেঁধে নেমেছে রাজ্যের অর্থদফতর। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত আর্থিক বছরে লাগাতার অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে ৩২ হাজার ভুয়ো করদাতা ধরা পড়েছে। তাদের জিএসটি রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে। চলতি আর্থিক বছরের প্রথম দু’মাসেও নতুন করে বাতিল হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার জিএসটি রেজিস্ট্রেশন। সব মিলিয়ে বিগত ১৬ মাসে বাংলায় বাতিল হয়েছে ৩৭ হাজার ভয়ো সংস্থা বা আয়কর দাতার জিএসটি রেজিস্ট্রেশন।
উল্লেখ্য, বাংলায় জিএসটি রেজিস্ট্রেশন রয়েছে প্রায় ৬ লক্ষ সংস্থার। তাদের সবাই যে নিয়মিত কর মেটায় বা রিটার্ন দাখিল করে, এমনটা নয়। তাই যে সংস্থাগুলির জিএসটি সংক্রান্ত হিসেবে গোলমালের আভাস রয়েছে, নজর রাখা হয় তাদের ওপর। পাশাপাশি খোঁজ নেওয়া হয়, কোন কোম্পানি শুধুমাত্র খাতায় কলমে জিএসটি রেজিস্ট্রেশন করে রেখেছে। জিএসটিতে সবচেয়ে পরিচিত প্রতারণা হল, ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট(আইটিসি) সংক্রান্ত জালিয়াতি। ভুয়ল চালান তৈরি করে আইটিসি আদায় পুরনো রেওয়াজ। যে ফাঁকফোকরের সুযোগ নিয়ে এই কাজ করা হয়, সেগুলিকেই এখন রোখার চেষ্টা করছে রাজ্যের অর্থদফতর। এর জেরে রাজ্যে বেশ কয়েক হাজার কোটি টাকার GST জালিয়াতি আটকানো গিয়েছে বলে দাবি করেছেন রাজ্যের অর্থদফতরের কর্তারা।