বাংলাজুড়ে তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেছে রাজ্য সরকারের ‘স্বাস্থ্যইঙ্গিত’ প্রকল্প। বিগত ২০২১ সালের ডিসেম্বরে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে রাজ্যের ১২টি হাসপাতালে চালু হয় প্রকল্পটি। যা আদতে একটি টেলি মেডিসিন প্রকল্প। তারপর ধীরে ধীরে রাজ্যের আরও ২৬টি হাসপাতালকে এই প্রকল্পে জোড়া হয়। আর এই সব হাসপাতের সঙ্গেই জুড়ে দেওয়া হয় বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেসকে। সেখানকার চিকিৎসকেরাই রাজ্যের ওই ৩৮টি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করেন রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যইঙ্গিত প্রকল্পের মাধ্যমে। আর তার জেরেই দেখা যাচ্ছে গত ১ বছরে স্ট্রোকে আক্রান্ত ৪০০ জন রাজ্যবাসীর জীবন রক্ষা করেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চালু করা টেলি মেডিসিন প্রকল্প ‘স্বাস্থ্যইঙ্গিত’। জানা গিয়েছে, রাজ্যের যে ৩৮টি সরকারি হাসপাতলে এখন স্বাস্থ্যইঙ্গিতের মাধ্যমে স্ট্রোকে আক্রান্তদের চিকিৎসা করা হচ্ছে সেখানে কোনও নতুন স্ট্রোক আক্রান্ত মরণাপন্ন রোগী এলেই সিটি স্ক্যান করে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে বাঙ্গুরে। অবস্থা বিচার করে রোগীর মাথায় জমাট বাঁধা রক্ত তরল করার প্রক্রিয়া জানিয়ে দিচ্ছে বাঙ্গুরের বিশেষজ্ঞরা। সেইমতো দেওয়া হচ্ছে জীবনদায়ী ইঞ্জেকশন।
এরপর জমাট বাঁধা রক্ত গলে যেতেই মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসছেন সিংহভাগ মানুষ। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ২০-৪০ হাজার টাকা দামের এই ইঞ্জেকশনগুলি এই ৩৮টি হাসপাতালে সরবরাহ করে রাজ্য। স্ট্রোকের রোগীরা তা পান সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে রাজ্যের ১২টি হাসপাতালে স্বাস্থ্যইঙ্গিত প্রকল্পটি চালু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তারপর চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণের পর ২০২২ সালের এপ্রিলে শুরু হয় মূল প্রকল্প। ধাপে ধাপে রাজ্যের মহকুমা, জেলা থেকে মেডিকেল কলেজে ছড়িয়ে পড়ে এই কাজ। তারপর মাত্র এক বছরে টেলি-মেডিসিনের মাধ্যমে ৪৫১ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা করা হয়। প্রাণ বাঁচে ৯০ শতাংশ রোগীর। প্রকল্পের অন্যতম কো-অর্ডিনেটর তথা বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেসের চিকিৎসক ডাঃ অর্পণ দত্ত জানিয়েছেন, সিটি স্ক্যান রিপোর্ট দেখে ও রোগীর নির্দিষ্ট কিছু শারীরিক অবস্থা বিচার করে টেলি মেডিসিনের মাধ্যমে তাঁরা দু’টি ওষুধের যে কোনও একটি দিতে বলেন। তাতে দারুণ কাজ হয়েছে। এর মধ্যে রোধ করা গিয়েছে ৬০ শতাংশ রোগীর শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সম্ভাবনা।