মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশে ক্রমশ মাথাচাড়া দিয়েছে উগ্র হিন্দুত্ববাদ। পাশাপাশি, আরও ফুলেফেঁপে উঠেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের ক্রিয়াকলাপ। এবার নতুন পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে আরএসএসের একটি শাখা সংগঠন। ‘সংবর্ধিনী ন্যাস’ নামে সংগঠনটি এই পরিকল্পনার নাম দিয়েছে ‘গর্ভ সংস্কার’ প্রকল্প। এই প্রকল্পে অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের গীতা, রামায়ণ পড়তে এবং সংস্কৃত শ্লোক আবৃত্তিতে উৎসাহ দেওয়া হবে। অর্থাৎ, সন্তানকে দেশভক্ত এবং সংস্কারী করে গড়ে তোলাই এই প্রকল্পের মূল কথা। সংঘ ঘনিষ্ঠ সংগঠনটির দাবি, তাদের এই পরিকল্পনা সম্পূর্ণ ভাবে বিজ্ঞানসম্মত। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে তুঙ্গে বিতর্ক।
প্রসঙ্গত, শনিবার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে সংগঠনের অন্যতম এক পদাধিকারী বলেছেন, ‘‘বিজ্ঞানে প্রমাণিত যে, গর্ভে চার সপ্তাহ থাকার পর থেকেই ভ্রূণের কানে শোনার ক্ষমতা তৈরি হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে এই প্রকল্প অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের সঙ্গে কথা বলার রাস্তা দেখাবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা মায়েদের বোঝাবো, সেই সময় কী করে আসন্ন শিশুর পরিবারের কথা, ভারতের কথা, যে রাজ্যে তারা থাকবে তার কথা এবং ভারতের মহাপুরুষদের জীবনী শোনানো যায়।’’ প্রকল্প অনুযায়ী, অন্তসত্ত্বাকে গীতা, রামায়ণ পড়ানো হবে। তাঁকে সংস্কৃত শ্লোক আবৃত্তিও করানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সংগঠন সূত্রে খবর, এই প্রকল্প নিয়ে সারা দেশেই নামা হবে। সংবর্ধিনী ন্যাসের অন্তর্গত চিকিৎসকেরা থাকবেন প্রকল্পের পুরোভাগে। তাঁরাই অন্তঃসত্ত্বা মা এবং তাঁর পরিবারকে বোঝাবেন, কী করে সংস্কারি এবং দেশভক্ত বাচ্চার জন্ম দেওয়া সম্ভব। সংগঠন সূত্রে খবর, এ জন্য গোটা দেশকে মোট পাঁচ ভাগে ভাগ করা হচ্ছে। প্রতিটি ভাগে থাকবেন ১০ জন চিকিৎসকের একটি করে দল। তাঁদের হাত দিয়েই প্রকল্পটির রূপায়ণ হবে। সংবাদ সংস্থাকে ওই সংগঠনের তরফে আরও জানানো হয়েছে যে, কেন্দ্রীয় ভাবে একটি আট সদস্যের দল তৈরি করা হয়েছে। গোটা বিষয়টি সামগ্রিক ভাবে সেই দলই দেখবে। খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই নানান মহলে উঠেছে শোরগোল। নিন্দায় মুখর হয়েছে বিরোধীরা। নেটমাধ্যমেও বইছে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের ঝড়।
![সন্তান হবে দেশভক্ত ও সংস্কারী! - অন্তঃসত্ত্বাদের রামায়ণ, গীতা শোনাবে আরএসএস-ঘনিষ্ঠ সংগঠন, চরমে বিতর্কের ঝড়](https://ekhonkhobor.com/wp-content/uploads/2023/06/7-2-1.jpg)