এবার মমতা সরকারের পদক্ষেপে রাজ্যে ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে আরও সুরক্ষিত হল ক্রেতার স্বার্থ। রাজ্যের আবাসন দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তিন কাঠা বা দুশো বর্গ মিটার জমিতে ছয়টি বা তার বেশি অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি হলেই তা রেরা অর্থাৎ রিয়েল এস্টেট রেগুলেটরি অথরিটির আওতায় চলে আসবে। অথরিটির ঘোষিত নিয়মবলী মেনে প্রমোটর সংস্থাকে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করতে হবে।
প্রসঙ্গত, এতদিন নিয়ম ছিল, সাড়ে সাত কাঠা জমি অথবা আটটি অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রেই শুধু অনুমতি নিতে হত। রেরা অর্থরিটির কাছে অভিযোগ জমা পড়ছিল যে ওই সংস্থার আওতায় না থাকা প্রকল্পগুলিতে ক্রেতারা ফ্ল্যাটি কিনতে গিয়ে প্রবলভাবে ঠকে যাচ্ছেন। বছরের পর বছর ফ্ল্যাট হস্তান্তর হচ্ছে না। কাজ অসম্পূর্ণ রেখে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা হচ্ছে। নতুন নিয়মে তিন কাঠার উপর তৈরি আবাসন প্রকল্পকেও রেরা’র কাছ থেকে প্রকল্পের বিশদ জানিয়ে অনুমতি নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ফ্ল্যাট কেনাবেচায় অনিয়মের অভিযোগ গোড়া থেকেই আছে। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ হল, সময়ে ফ্ল্যাট হস্তান্তর না করা। এছাড়া চুক্তিতে উল্লেখিত সুবিধা না থাকা, প্রকল্প মাঝপথে বন্ধ করে দেওয়ার মতো একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। কেন্দ্রীয় সরকার ‘রেরা’ গঠন করে সমস্ত ফ্ল্যাট নির্মাতা কোম্পানিকে ওই অথরিটির কাছে নাম নথিভুক্ত করতে বলে। এই আইনে বলা আছে, আবাসন প্রকল্প শুরুর আগে প্রমোটার সংস্থাকে সব কিছু বিশদে রেরা’কে জানাতে হবে। তাতে প্রকল্প ব্যয়, নকশা, কতদিনের মধ্যে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা হবে, এই সব খুঁটিনাটি থাকতে হবে।
বলা হয়েছে, প্রকল্পের শুরুতে ফ্ল্যাটের দামের দশ শতাংশের বেশি অর্থ বুকিং বাবদ দাবি করা যাবে না। সময়ে ফ্ল্যাট দিতে না পারলে অতিরিক্ত সময়ের জন্য ক্রেতাকে জমা অর্থের ওপর স্টেট ব্যাঙ্কের সেভিংস অ্যাকাউন্টের সুদের হারের উপর আরও দুই শতাংশ বেশি সুদ বাবদ দিতে হবে। শুধু তাই নয়। প্রকল্প শেষে কমপ্লিশন সার্টিফিকেট পাওয়া পর্যন্ত প্রকল্পে নজরদারি চালাবে রেরা। কোনও ফ্ল্যাট মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হলেই অথরিটির কাছেই অভিযোগ জমা করতে পারবেন।