এখনও কাটেনি করমণ্ডল-এক্সপ্রেসের বিভীষিকা। গত ২রা জুন উড়িষ্যার বালেশ্বরে ঘটে গিয়েছে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা। প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় তিনশো’র কাছাকাছি মানুষ। এরপরই কেন্দ্র সরকার থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর দফতর-সহ বিভিন্ন রাজ্য সরকার মৃতের পরিবার ও আহতদের জন্য ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করে। এরপরই প্রকাশ্যে এল একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা। কেবলমাত্র সরকারি ক্ষতিপূরণ হাতাতে নিজের জীবিত স্বামীকে সরকারি খাতায় মৃত দেখিয়ে দিলেন কটকের এক মহিলা। তাঁর নাম গীতাঞ্জলি দত্ত। এদিকে স্ত্রীর এমন কার্যকলাপ দেখে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ স্বামী। তারপর তিনিই পুলিশে গিয়ে খবর দেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তল্লাশি শুরু করতেই গা ঢাকা দিয়েছেন ওই মহিলা। ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়েছে কটকের মানিয়াবান্ধা এলাকায়। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই মহিলা থানায় গিয়ে জানিয়েছিলেন যে, গত ২ জুন করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় তাঁর স্বামী বিজয় দত্ত মারা গিয়েছেন। এমনকী মর্গে গিয়ে নিজের স্বামীর দেহ শনাক্তও করে এসেছিলেন, এমনও জানিয়েছিলেন তিনি।
এরপর দুর্ঘটনায় মৃতদের জন্য রেলমন্ত্রক এবং উড়িষ্যা সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষিত আর্থিক ক্ষতিপূরণ পেতে তিনি নিজের স্বামী মারা গিয়েছেন বলে ভুয়ো নথিপত্র জমা দেন গীতাঞ্জলি। কিন্তু সেই নথি যাচাই করতে গিয়েই আসল ঘটনা প্রশাসনের নজরে চলে আসে। স্ত্রীর এই কাজের কথা জানতে পেরে রেগে যান স্বামী বিজয় দত্তও। এরপর তড়িঘড়ি তিনি মানিয়াবান্ধা থানায় গিয়ে স্ত্রীর নামে অভিযোগ দায়ের করেন। পরে যদিও মানিয়াবান্ধা থানার পুলিশ জানায়, ওই দম্পতি গত ১৩ বছর ধরে আলাদা থাকেন। তাঁদের মধ্যে এখন কোনও সম্পর্ক নেই বললেই চলে। স্বামী বিজয় দত্ত বলেন, যেভাবে তাঁর নামে ভুয়ো নথি পেশ করে যে গীতাঞ্জলি সরকারি ক্ষতিপূরণ হাতানোর ছক কষেছিল, তা তিনি জানতে পেরেই সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেন। এই ঘৃণ্য আচরণ যে একেবারেই তিনি বরদাস্ত করবেন না, তা পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন বিজয়বাবু। এমনকী গীতাঞ্জলির কড়া শাস্তির আবেদন করেছেন পুলিশে। অভিযোগ পেতেই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, বর্তমানে ওই মহিলা পলাতক। ইতিমধ্যেই তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।