দেশীয় রাজনীতির মঞ্চে ক্রমশ আত্মবিশ্বাস ফিরে পাচ্ছে কংগ্রেস। মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে হিমাচল প্রদেশ ও কর্ণাটকে বিজেপির গদি ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। এই দুই রাজ্যে হাত শিবিরের জয়কে অত্যন্ত তাৎপর্যবাহী বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। প্রসঙ্গত, হিমাচল প্রদেশ ও কর্ণাটকে প্রচারের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢড়া। এবার সেই তাঁকেই আসন্ন নির্বাচনগুলিতে প্রচারের নীল নকশা তৈরির দায়িত্ব দিতে চলেছে কংগ্রেস। কংগ্রেস সূত্রে খবর, আপাতত তেলেঙ্গানা ও মধ্যপ্রদেশকে পাখির চোখ করেই প্রচারে ঝাঁপাবেন প্রিয়াঙ্কা। ইতিমধ্যেই তেলেঙ্গানায় কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছেন সোনিয়া-কন্যা। ১২ই জুন মধ্যপ্রদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটের দামামা বাজানোর প্রচার শুরু করবেন তিনি। পাশাপাশি সময় দেবেন ছত্তিশগড়েও।
হিমাচল প্রদেশ ও কর্ণাটক, এই দুই রাজ্যে প্রিয়াঙ্কার প্রচারের মূল বিষয় ছিল মহিলাদের ক্ষমতায়ন। আরও বেশি বেশি করে মহিলাদের প্রার্থী করা, মহিলাদের অনুদান দিয়ে জীবনযাপনে নিরাপত্তা তৈরি করার মতো বিষয়গুলিকেই নির্দিষ্ট করেছিলেন কংগ্রেস নেত্রী। কর্ণাটকে যখনই ধর্মীয় মেরুকরণ মাথাচাড়া দিয়েছে, তখনই প্রিয়াঙ্কা বলেছেন, “যিনি রামভক্ত, তাঁকে গ্যাসের সিলিন্ডার যে দামে কিনতে হয়, যিনি কোরান পড়েন, তাঁকেও একই দামে কিনতে হয়। সিলিন্ডারের দামটা কোথা থেকে কোথায় পৌঁছেছে সেটা যাতে আপনারা ভুলে যান সেই কারণেই হনুমান চালিশা, বজরংবলি, হিজাবের কথা পেড়ে আনা হচ্ছে।” অর্থাৎ, বিজেপি যত ধর্মীয় মেরুকরণের ছক কষেছে, প্রিয়াঙ্কা তথা কংগ্রেস তত সেই প্রচারকে রুটি-রুজির টান আর মূল্যবৃদ্ধির মতো জীবনের সমস্যার দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন। শেষে দেখা গিয়েছে, কন্নড়ভূমে মুখ থুবড়ে পড়েছে মেরুকরণ।
উল্লেখ্য, আপাতত যে দু’টি রাজ্যে প্রিয়ঙ্কাকে মূল দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, সেই দু’টি রাজ্যেই কংগ্রেস প্রধান বিরোধী দল। তেলেঙ্গানায় কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের দলের বিরুদ্ধে মূল লড়াই কংগ্রেসেরই। আবার মধ্যপ্রদেশে আগেরবার কংগ্রেস সরকার গড়লেও পরে ‘অপারেশন লোটাস’ করে তা ফেলে দেওয়া হয়। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে ভাঙিয়ে নিয়ে গিয়ে কেন্দ্রে মন্ত্রী করে পদ্মশিবির। আর কমলনাথের সরকার পড়ে যায়। সম্প্রতিই প্রিয়াঙ্কা ঘনিষ্ঠ এক কংগ্রেস নেতা বলেছেন, “রাহুল গান্ধী মোদী জমানায় বিপন্ন ভারতে বিকল্প ধারণা নির্মাণের কাজ করছেন। আর মাঠে ময়দানের প্রচারে সেটাকেই মেঠোভাষায় নিয়ে যাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা।” দাদা-বোনের এই যুগবলবন্দি অসামান্য, এমনই বক্তব্য তাঁর।