বৃহস্পতিবার, ছিল ৬ জুন। ১৯৮৪ সালে এই দিনেই অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে ‘অপরেশন ব্লু স্টার’-এর নির্দেশ দিয়েছিলেন দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। আর সেই ঘটনার ৩৯তম বর্ষপূর্তির দু’দিন আগে গত ৪ জুন ট্যাবলো সাজিয়ে মিছিল বেরোল কানাডার ব্রাম্পটন শহরে। ট্যাবলোয় দেখা গেছে, ইন্দিরার আদলে তৈরি পুতুলের বুলেটে শরীর ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছে। সাদা শাড়ি লাল রক্তে ভেসে যাচ্ছে। পাগড়ি পরা দুই রক্ষীর সামনে অসহায় ভাবে দু’হাত মাথায় তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তিনি। পিছনে একটি সাদা পোস্টারে বড় বড় অক্ষরে লাল রঙ দিয়ে লেখা ‘প্রতিশোধ’। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে ভারতে। দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ঘটনাকে সাজিয়ে গুছিয়ে মিছিল করেছেন যাঁরা, তাঁদের খলিস্তানপন্থী বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। কারণ ট্যাবলোর গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন মাথায় কমলা রঙের পাগড়ি বাঁধা সাদা পোশাকের তিন জন। আর শিখ ধর্মে কমলা হল খালসাদের রঙ।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৪ সালের জুন মাসে খলিস্তানপন্থী নেতা জার্নেল সিংহ ভিন্দ্রেনওয়ালে এবং তাঁর অনুগামীদের খুঁজে বের করতে ‘অপারেশন ব্লু স্টার’-এর নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা। ওই অভিযানে সরকারি হিসাবে অন্তত ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল অমৃৎসরের স্বর্ণমন্দির চত্বরে। ইন্দিরাকে হত্যার ঘটনা এই অভিযানের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া ছিল বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কানাডার ওই মিছিলে সেই হত্যাকাণ্ডকেই এমন সাজিয়ে গুছিয়ে প্রদর্শনের সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। বুধবার কংগ্রেস নেতা মিলিন্দ দেওড়া নিজের টুইটার হ্যান্ডলে ওই মিছিলের একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে লিখেছেন, ‘৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ ধরে চলেছে এই মিছিল। এটা একটা দেশের যন্ত্রণার ইতিহাস। যে যন্ত্রণা দেশের প্রধানমন্ত্রীর হত্যায় গোটা দেশ অনুভব করেছিল। এক জন ভারতীয় হিসাবে বলছি, গোটা বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ ভাবে এই মিছিলের নিন্দা করা উচিত।’