সাম্প্রতিক কালে পাহাড়ে ক্রমশই জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, জিএনএলএফ সহ অধিকাংশ দলের নেতারা। বদলে কদর বাড়ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দল তৃণমূলের। এই অবস্থাতেই দেখা গেল পাহাড়ের বাসিন্দাদের কাছে রাজ্য সরকারের কদরও বাড়ছে। তার প্রমাণ ঐক্যশ্রী প্রকল্পের সাফল্য। পাহাড়ের সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের ঐক্যশ্রী প্রকল্পের আওতায় আনতে চেয়েছিল রাজ্য। সেই লক্ষ্যেই টার্গেট নেওয়া হয়েছিল পাহাড় সহ দার্জিলিং জেলায় ১ বছরের মধ্যে ২২ হাজার পড়ুয়ায়কে ঐক্যশ্রী প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।
কিন্তু এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই দেখা যাচ্ছে মাত্র ৮ মাসের মধ্যেই জেলায় প্রায় সাড়ে ২৩ হাজার পড়ুয়া চলে এসেছে ঐক্যশ্রী প্রকল্পের আওতায়। কেউ পাচ্ছে প্রি-ম্যাট্রিক, কেউ পোস্ট-ম্যাট্রিক, আবার কেউ উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাচ্ছে। আর এই সাফল্যের নেপথ্য কাজ করছে পাহাড়ের পড়ুয়াদের এই প্রকল্পের আওতায় আসার ঘটনা।
দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২২-’২৩ আর্থিক বছর ঐক্যশ্রী প্রকল্পের আওতায় ২২ হাজার ৪০০ পড়ুয়াকে আনার টার্গেট রাখা হয়েছিল। দেখা যাচ্ছে সেই লক্ষ্যপূরণের সময়সীমা শেষ হওয়ার ৪ মাস আগেই লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে যাওয়া গিয়েছে। ২০২২ সালের জুলাই মাস থেকে ফর্ম বিলি শুরু করা হয়। ফর্ম গ্রহণ করা হয় চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত। নির্দিষ্ট সময়কালের মধ্যে আবেদন জমা পড়ে ২৩ হাজার ৮৫৩টি। তা খতিয়ে দেখে উপভোক্তা হিসেবে বাছাই করা হয়েছে ২৩ হাজার ৪৫৭ জনকে।
দার্জিলিং জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি পড়ুয়া যে ব্লক থেকে ঐক্যশ্রী প্রকল্পের আওতায় এসেছে তা হল ফাঁসিদেওয়া ব্লক। সেখানকার ৭ হাজার ৫৫১জন পড়ুয়া এই প্রকল্পের আওতায় এসেছে। এরমধ্যে এখানে প্রি-ম্যাট্রিক স্কলারশিপ পাচ্ছে ৬ হাজার ৪২৭ জন। দার্জিলিং পুরসভা এলাকায় উপভোক্তার সংখ্যা ৩৩৪৭ জন।
এর বাইরে শিলিগুড়ি শহরে ২৭৫৯ জন, দার্জিলিং পুলবাজারে ১০৩৫ জন, জোরবাংলো-সুখিয়াপোখরিতে ১৫৪৭ জন, খড়িবাড়িতে ৭৯১ জন, কার্শিয়াং গ্রামীণে ৮৩০ জন, মাটিগাড়ায় ১৫২৫ জন, মিরিকে ৭৭৪ জন, নকশালবাড়িতে ১৩৮৫ জন, রংলি-রংলিয়টে ১১৪৭ জন, কার্শিয়াং পুরসভায় ৭৬৬ জন উপভোক্তা রয়েছে। সব মিলিয়ে পাহাড়েই উপভোক্তার মোট সংখ্যা ৯,৪৪৬জন।
ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে স্কলারশিপের অর্থ ঢুকতে শুরু করেছে। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা প্রি-ম্যাট্রিক স্কলারশিপে ১ হাজার ১০০ টাকা এবং ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা হস্টেল খরচ সহ সাড়ে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পাবে। একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা পোস্ট-ম্যাট্রিক স্কলারশিপে হস্টেল খরচ, টিউশন ফি সহ ১০ হাজার টাকার ওপরে পাবে।