শুক্রবার উড়িষ্যার বালেশ্বরে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। যার ফলে গোটা এলাকা কার্যত মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। হু হু করে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই তা ৩০০ ছু্ঁইছুঁই। এই পরিস্থিতিতে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে একাধিক সম্ভাবনা তত্ত্ব উঠে আসার পর ম্যান মেড তত্ত্ব খাড়া করা হচ্ছে। স্বয়ং রেলমন্ত্রীই এমন বলছেন। দুর্ঘটনাস্থলে তিনি বলেছেন, পয়েন্ট মেশিনের সেটিং বদল ও ইন্টারলকিং সিস্টেমে কিছু বদলের জেরে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ‘ম্যান মেড’ বিপর্যয়, কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি বা রেলের কোনও গাফিলতি নেই। গাফিলতি আড়াল করতেই কি অন্তর্ঘাত তত্ত্ব?
অশ্বিনী বৈষ্ণব ইঙ্গিতপূর্ণভাবে বলেছিলেন, দুর্ঘটনার কারণ ও সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তারপর গতকাল সন্ধ্যায় ঘটনার সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করে রেলবোর্ড। একই সঙ্গে কমিশন অব রেলওয়ে সেফটির তদন্তও চলবে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, সিগন্যালিং ব্যবস্থায় ইলেকট্রিক পয়েন্ট মেশিনের সেটিংয়ে বদলের জন্য করমণ্ডল এক্সপ্রেস নির্ধারিত আপ লাইন থেকে লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে বলে দাবি রেল কর্তৃপক্ষের। রেলবোর্ডের এহেন বক্তব্যে অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা জোরালো হচ্ছে।
সিআরএসের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, ঘটনার দিন অর্থাৎ শুক্রবার সন্ধ্যায় ৭টা নাগাদ আপ মেন লাইন দিয়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের যাওয়ার কথা ছিল। একই সময়ে ডাউন মেন লাইন দিয়ে যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসের আসার কথা ছিল। বাহানাগা বাজার স্টেশনে দুটি ট্রেনের একটিরও দাঁড়ানোর কথা নয়, যাতে দুটি ট্রেন থ্রু হয়ে বেরিয়ে যেতে পারে, তাই লুপ লাইনে মালগাড়ি দাঁড় করানো হয়। কিন্তু পয়েন্ট মেশিনের সেটিং বদলের কারণে লুপ লাইনেই ঢুকে পড়ে করমণ্ডল।
মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষের পর লাইনচ্যুত করমণ্ডল এক্সপ্রেসের একাধিক বগি ডাউন মেন লাইনে গিয়ে পড়ে। সেই লাইনে যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসের সঙ্গে ফের সংঘর্ষ হয়। সেখানে উঠে আসছে কবচের প্রসঙ্গও। উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন অ্যান্টি কলিশন ডিভাইসের জন্য অর্থ মঞ্জুর করেছিলেন, ইন্ডিয়ান রেলওয়েজ ভিশন ২০২০-তে তার উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি। কবচ নাম দিয়ে সে জিনিস অতি সামান্য অংশ রেলপথে চালু হয়েছে। গোটা রেলপথের মাত্র দুই শতাংশে তা চালু হয়েছে।