মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। মৃতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। স্বাভাবিকভাবেই বড়সড় প্রশ্নের মুখে ভারতীয় রেলের ভূমিকা। এহেন বিপর্যয়ের পিছনে যে তাদের অকর্মণ্যতাই দায়ী, তা এককথায় পরিষ্কার। সিগন্যালিং সিস্টেম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার বলেন, অ্যান্টি-কলিশন সিস্টেম না থাকার কারণেই এহেন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে দুর্ঘটনা। এর মধ্যেই আর একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম। যেখানে দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ-পূর্ব রেলে প্রযুক্তগত উন্নতির জন্য বাজেটে একটি মোটা অঙ্কের অর্থ রবাদ্দ করা হয়েছিল। যে এলাকার আওতায় পড়ে বালেশ্বরও। কিন্তু গত তিন বছরে প্রযুক্তির জন্য এক পয়সাও খরচ করেনি মোদী সরকার।
পাশাপাশি জানা গিয়েছে, এই রুটে কবচ ইনস্টলের জন্য ৪৬৮.৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। ১৫৬৩ কিমি দীর্ঘ রেললাইনের জন্য এই অর্থ খরচ করে কবচ বসানোর কথা ছিল। কিন্তু ২০২২ সালে মার্চ পর্যন্ত এর জন্য কোনও অর্থ খরচ করা হয়নি। ট্রেন সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য যে সিস্টেম চালু করার কথা ছিল এই জোনেই, তার জন্য ৩১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। সেখানেও গত বছর মার্চ পর্যন্ত টাকা খরচের কোনও তথ্য নেই। এখনও পর্যন্ত তদন্তে উঠে এসেছে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার নেপথ্যে ইলেক্ট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেমের গন্ডগোলই দায়ী। অথচ ২০২১-২২ অর্থবর্ষে দক্ষিণ-পূর্ব রেলে অটোমেটিক ব্লক সিগন্যালিং, সেন্ট্রালাইসড ট্রাফিক কন্ট্রো এবং ট্রেন সংঘর্ষ এড়ানোর সিস্টেমের জন্য ১৬২.২৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এখনও পর্যন্ত এর পিছনে কোনও অর্থই ব্যয় করা হয়নি। কেন বাজেটে অর্থ বরাদ্দ হওয়ার পরও কোনও কাজ হয়নি? উঠছে প্রশ্ন। জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় নাকি রেল সুরক্ষা সংক্রান্ত কাজের জন্য কোনও টেন্ডার ডাকাই হয়নি। অর্থাৎ রেল এ বিষয়ে তৎপর হলে যে সহজেই বিপদ এড়ানো যেত, তা স্পষ্ট।
