অতিসম্প্রতিই ২ হাজার টাকার নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়ার ঘোষণা করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। গত ১৯ মে, শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায় আরবিআই। অবিলম্বে ২ হাজার টাকার নোট ব্যবহার বন্ধ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ব্যাঙ্কগুলিকে। ২ হাজার টাকার নোট থাকলে, তা ২৩শে মে থেকে ৩০শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ব্যাঙ্কে জমা করতে হবে। অর্থাৎ দু’হাজার টাকার নোটের আয়ু ৩০শে জুন পর্যন্ত। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী এই সময়ের মধ্যে ব্যাঙ্কগুলিতে জমা পড়বে বিপুল পরিমাণ টাকা। তাতে নগদ জোগান বাড়বে। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি কমবে আমানতের উপর সুদ? কারণ, টাকার জোগান বাড়লে ব্যাঙ্কগুলি সাধারণ মানুষকে বেশি টাকা সুদ দিয়ে খরচের বহর বাড়াতে চাইবে না। বরং কম সুদে ঋণ দিয়ে তারা ওই বাড়তি নগদ বাজারে এনে ফেলবে, এমনটাই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
এপ্রসঙ্গে অন্যতম ক্রেডিট রেটিং সংস্থা ইক্রা জানিয়েছে, নোটবন্দির সময় ব্যাঙ্কগুলিতে নগদ বৃদ্ধি পেয়েছিল। সেইসময় ব্যাঙ্কগুলিতে যেভাবে আমানত সংগ্রহের ব্যাপারে চাপ কমেছিল, এখনও তাই-ই হবে। অর্থাৎ আমানত বাড়বে। এক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলিতে আমানতের উপর সুদ বৃদ্ধির যে চাপ থাকত, তা কমবে। ইক্রা’র দাবি, এতে স্বল্পমেয়াদী আমানতগুলির সুদের হার কমবে। গতবছর মে মাস থেকে গত একবছর ধরে ধাপে ধাপে ২.৫ শতাংশ রেপো রোট বাড়ায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তার জেরে ব্যাঙ্কগুলিও আমানতের উপর সুদের হার বাড়াতে বাধ্য হয়। তা সাধারণ মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছিল। যদিও ঋণের ক্ষেত্রে সুদ বৃদ্ধি সমস্যায় রাখে বহু মানুষকে। কিন্তু বর্তমানে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে সুদ যে আর কোনওভাবেই বাড়বে না, তা স্পষ্ট জানিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াও। তাদের রিপোর্ট বলছে, আরবিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, ৩.৬ লক্ষ কোটির দু’হাজার টাকার নোট এখনও রয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে যদি ৬০ হাজার কোটি টাকার নোট ব্যাঙ্কের কাছেই থেকে যায়, তাহলে বাজারে রয়েছে তিন লক্ষ কোটি টাকার নোট। এর মধ্যে যদি দু’লক্ষ কোটি টাকার নোট মানুষ খরচ করে ফেলেন বা ব্যাঙ্কে গিয়ে বদলে নেন, সেক্ষেত্রে ব্যাঙ্কে জমা পড়বে এক লক্ষ কোটি টাকা।