এবার রাষ্ট্রদ্রোহিতা আইনের পক্ষেই অবস্থান নিল ভারতের আইন কমিশন। এই আইন বলবৎ রাখা উচিত, রিপোর্টে সেই কথাই স্পষ্ট জানিয়ে দিল তারা। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪এ ধারায় লিখিত আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রদ্রোহিতা আইনের ধারাগুলি পরীক্ষা করেছিল এই কমিশন। তাদের মতে, ব্রিটিশ আমলের এই আইন অবশ্যই বলবৎ করা উচিত। তবে একাধিক ধারায় সংশোধন করতে হবে এবং কোন ক্ষেত্রে এই আইন কার্যকর করা যায় তা স্পষ্ট করা দরকার। ঔপনিবেশিক যুগের আইন বলেই তাকে বাতিল করা হবে, এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয় বলেই দাবি রিপোর্টে। আইন কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের অপব্যবহার করা হয়। তাই কেন্দ্র সরকারের তরফে এই আইন সংক্রান্ত বিশেষ নির্দেশিকা প্রকাশ করা দরকার। এছাড়াও এই আইনের আওতায় আলাদা রকমের কোনও সাজার ব্যবস্থা করা যাবে না। ভারতীয় দণ্ডবিধির অন্যান্য ধারার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে অপরাধীকে শাস্তি দিতে হবে।
পাশাপাশি, কমিশনের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের আওতায় যদি কারও বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয় তাহলে আত্মরক্ষার সুযোগও দিতে হবে অভিযুক্তকে। প্রসঙ্গত, ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে রাষ্ট্রদ্রোহের ধারায় ৩৫৬টি মামলা নথিভুক্ত হয়। ৫৪৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং মাত্র ১২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। এর বিরুদ্ধে শুনানির সময়, সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে এই আইনটি পর্যালোচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। যতদিন না পর্যালোচনা শেষ হচ্ছে ততদিন রাষ্ট্রদ্রোহের ধারায় কোনও মামলা নথিভুক্ত করা উচিত নয় বলেই জানায় শীর্ষ আদালত। তার উত্তরেই গত মে মাসে অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরমানি শীর্ষ আদালতকে বলেন, ‘‘ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪ ধারা-সহ রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের আওতায় থাকা বিভিন্ন ধারাগুলি পরীক্ষা করার কাজ শুরু করেছে কেন্দ্র। সেই প্রক্রিয়া এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।’’ এরপর, শেষমেশ রাষ্ট্রদ্রোহিতা আইন প্রসঙ্গে আইন কমিশন রিপোর্ট জমা দিল।