২০২৩ সালেই নতুন ৭টি জেলা পেতে চলেছে বাংলা। আর এবিষয়ে রাজ্য প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ করতে বলেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। গত বুধবার নবান্ন সভাঘরের এক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে জেলার সংখ্যা বৃদ্ধির ওপর রাজ্য প্রশাসনকে জোর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। ওই রুদ্ধদ্বার বৈঠকে আধিকারিকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার সময় এই বিষয়টিও গুরুত্ব পায়। জেলার সংখ্যা বাড়লে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে। মানুষ হাতের কাছেই পাবেন বিভিন্ন উন্নত পরিষেবা। কিছু ক্ষেত্রে আর্থিক বরাদ্দও বাড়বে। মুখ্যমন্ত্রী এই কারণগুলি তুলে ধরেই জেলার সংখ্যা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন বলেই জানা গিয়েছে নবান্ন সূত্রে।
প্রসঙ্গত, বাংলায় বাম আমলে মেদিনীপুর ভেঙে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের জন্ম হয়েছিল। আবার পশ্চিম দিনাজপুর ভেঙে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলারও জন্ম হয় বাম আমলেই। সেই হিসাবে দেখতে গেলে বাম জমানায় নয়া জেলার জন্ম সংখ্যা ৪। মমতার আমলে কিন্তু রাজ্যে নতুন জেলা তৈরির সংখ্যা বেশ বাড়তে চলেছে। আগেই জলপাইগুড়ি ভেঙে আলিপুরদুয়ার জেলা তৈরি হয়েছে। দার্জিলিং থেকে আলাদা করে করে কালিম্পংকে পৃথক জেলার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। বর্ধমান ভেঙে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৈরি হয়েছে। আবার পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ঝাড়গ্রামকে আলাদা করে পৃথক জেলা গড়া হয়েছে। অর্থাৎ ইতিমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে রাজ্যে নয়া ৫টি জেলা তৈরি হয়েছে। এবার সেই সংখ্যা এক লাফে ১২ হতে চলেছে। ২০২২ সালের ২রা আগস্ট রাজ্য মন্ত্রিসভা এই নতুন ৭টি জেলা তৈরির ছাড়পত্র দিয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রস্তাবিত জেলাগুলি হল – উত্তর ২৪ পরগনা থেকে বসিরহাট মহকুমাকে আলাদা করে পৃথক বসিরহাট জেলা এবং বনগাঁ মহকুমাকে আলাদা করে পৃথক ইচ্ছামতী জেলা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাকে ভেঙে পৃথক সুন্দরবন জেলা, বাঁকুড়া ভেঙে পৃথক বিষ্ণুপুর জেলা। এছাড়াও মুর্শিদাবাদ জেলা ভেঙে ৩টি পৃথক জেলা গড়া হচ্ছে। এগুলি হল জঙ্গিপুর, বহরমপুর ও কান্দি। আরও কিছু নতুন জেলা সৃষ্টির প্রস্তাব আগামী দিনে আসে কি না, সেদিকেও তাকিয়ে রয়েছে ওয়াকিবহাল মহল। আপাতত ঠিক হয়েছে বসিরহাট, ইচ্ছামতী, কান্দি ও জঙ্গিপুর জেলায় ১টি করেই মহকুমা থাকবে। ডোমকল, বহরমপুর ও লালবাগ মহকুমা থাকবে বহরমপুর জেলার মধ্যে। সোনামুখীকে পৃথক মহকুমার মর্যাদা দেওয়া হতে পারে ও তা বিষ্ণুপুর জেলার মধ্যে থাকবে। এর বাইরে আমতা ও গড়বেতাকে পূর্ণাঙ্গ মহকুমার স্বীকৃতি দেওয়ারও পরিকল্পনা করেছে রাজ্য।