প্রায় ৮০০ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হয়েছিল এই স্টেডিয়াম। একসঙ্গে বসে খেলা দেখতে পারেন এক লক্ষ ১০ হাজার মানুষ। স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রীর নামে। আর এবার সেই মাঠেই ধরা পড়ল চরম অব্যবস্থা। সোমবার আইপিএল ফাইনাল চলাকালীন হঠাৎই বৃষ্টি নামে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে। আধঘণ্টা পর বৃষ্টি থেমে যায়। কিন্তু খেলা শুরু করা সম্ভব হয় না। কারণ, মাঠের একটি পিচে জল জমে গিয়েছিল। সেখান দিয়ে দৌড়তে গেলে চোট পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। অন্যদিকে, কলকাতার মাঠে দেখা গিয়েছে, বৃষ্টি হলেই পুরো মাঠ ঢেকে ফেলা হয়। এর ফলে বৃষ্টি থামার পর পরই খেলা শুরু করে দেওয়া সম্ভব হয়। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তান বনাম ভারত ম্যাচ হয়েছিল ইডেনে। সে বার বৃষ্টি শেষ হওয়ার পরেই খেলা শুরু করা সম্ভব হয়েছিল। সাদা আস্তারণে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল মাঠ। জল মাঠে পড়ার কোনও সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু আহমেদাবাদে পিচ ঢাকার পর আরও একটি আস্তারন দেওয়া হয় তার উপর, কিন্তু তাতে মাঠের খুব অল্প অংশই ঢাকা পড়ে। সেই আস্তারণ সরাতে গিয়েই সোমবার পাশের পিচে জল পড়ে যায়। তাতেই বিপত্তি ঘটে। আশিস নেহরাকে দেখা যায়, ভেজা অংশে পা দিয়ে দাগ কাটতে। জায়গাটা যে ভাল রকমের ভেজা তা বোঝা যাচ্ছিল। সুপারসপার দিয়ে বার বার মাঠ শুকনো করার চেষ্টা করতে দেখা যায় কর্মীদের।
এখানেই উঠছে প্রশ্ন। যে মাঠ তৈরি করতে ৮০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল, সেই স্টেডিয়ামে এমন এমন অবস্থা কেন? বিরক্ত দর্শকরা। সেই সঙ্গে স্টেডিয়ামের ছাদ ফুটো হয়েও জল পড়তে দেখা যায়। সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিও দেখা গিয়েছে। সেখানে দেখা যায় স্টেডিয়ামের ছাদ ফুটো হয়ে জল পড়ছে। আর সেই জলে ভেসে যাচ্ছে দর্শকাসন। জনৈক দর্শক সেই ভিডিও টুইট করে লেখেন, “যাঁরা ছাদে ঘেরা স্টেডিয়ামের আশা করছেন, তাঁরা দেখুন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট বোর্ডের সবচেয়ে ভাল স্টেডিয়ামে কী অবস্থা।” সেই ভিডিওয় এক সমর্থক লিখেছেন, “খুব খারাপ অভিজ্ঞতা স্টেডিয়ামের ভিতরে এবং বাইরে। পার্কিংয়ের এলাকায় কাদা ভর্তি এবং সুইমিং পুলের মতো জল।” পাশাপাশি, স্টেডিয়ামের দুর্দশার আরও তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। কেদার নামে এক সমর্থক পরিবার নিয়ে খেলা দেখতে এসেছিলেন। কিন্তু বৃষ্টি শুরু হওয়ার পরেই সমস্যা বাড়ে। তিনি সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, “বৃষ্টি শুরু হতেই সবাই ছোটাছুটি করে আশ্রয় খুঁজতে শুরু করে। প্রবল ধাক্কাধাক্কি হয়। স্টেডিয়ামে কোনও নেটওয়ার্ক ছিল না। পরিবারের সঙ্গে আমি আর একটু হলেই আলাদা হয়ে যেতাম। তখন যোগাযোগের উপায় থাকত না।” উল্লেখ্য, এবছরই ভারতে এক দিনের বিশ্বকাপ হবে। তার আগে মাঠগুলির অবস্থা উন্নতি করতে কয়েকশো কোটি টাকা খরচ করছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। সেই তালিকায় রয়েছে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম। বিশ্বকাপ ফাইনাল আয়োজন দায়িত্বও পেয়েছে এই মাঠ। ফলত স্বাভাবিকভাবেই এহেন বেহাল পরিস্থিতি জোর সমালোচনার মুখে ফেলেছে কর্তৃপক্ষকে।