রবিবারই মহাসমারোহে উদ্বোধন হয়েছে নতুন সংসদ ভবনের। এবার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কড়া ভাষায় একহাত নিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এদিন তৃণমূলের জন সংযোগ কর্মসূচির ফাঁকে তিনি বলেন, “নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন হল বলে দেশের ১৪০ কোটি মানুষের আশাআকাঙ্খা পূর্ণ হল বলে দাবি করা হচ্ছে। আর যিনি দেশের সাংবিধানিক প্রধান, তাঁকে আমন্ত্রণ পর্যন্ত করা হয়নি। সেখানে পণ্ডিতরা, ধর্মগুরুরা, পূজারীরা ডাক পাচ্ছেন। সেই অনুষ্ঠানে বিরোধীরা নেই। আজ প্রধানমন্ত্রী একটি টিজারও দিয়ে রাখলেন। গণতন্ত্র নয়, তিনি আসলে একনায়কতন্ত্র করতে চান। কিন্তু নিজের ভাল করে, ১৪০ কোটি মানুষের ভাল করা যায় না।” এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। “সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নারী ক্ষমতায়নের কথা বলেন। আর তার থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে ভারতের অলিম্পিক পদকজয়ী কুস্তিগিরদের টেনে হিঁচড়ে দিল্লী পুলিশ নিয়ে যাচ্ছে। এর থেকে লজ্জার কথা আর কিছু হতে পারে না”, প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে বক্তব্য অভিষেকের।
পাশাপাশি, তৃণমূল সাংসদ বলেন, “তিনি বলছেন, আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আপনি সংসদ ভবন তৈরি করেছেন ১৫০০ কোটি টাকা খরচ করে। সেখানে তো কিছু আলোচনাই হয় না। বিরোধীরা বলতে পারে না। মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়। শেষ তিনটে অধিবেশন দেখুন। ওই বিপুল টাকা খরচ করে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন তৈরি করছেন, দেশের উপরাষ্ট্রপতির বাসভবন তৈরি করছেন। মানুষের ছাদের টাকা বন্ধ? সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা খরচ করে বিমান কিনেছেন। তাই সাংসদ ভবন তৈরি করে লাভ কী?” দেশের একাধিক রাস্তা, ভবন, প্রকল্পের নাম বদল করা নিয়েও প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনায় সরব হন অভিষেক। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বোধহয় পাল্টানের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। সবকিছু উনি পাল্টে দিতে চান। প্রধানমন্ত্রী নোট না পাল্টে, অবস্থান না পাল্টে, পার্লামেন্ট না পাল্টা যদি নিজের দৃষ্টিভঙ্গীটা পাল্টাতেন তাহলে এই দুর্দশা দেশের হত না। চারশো টাকার রান্নার গ্যাস আজ মানুষকে ১২০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এই টাকা যদি গ্যাসে খরচ করা হতো তাহলে গ্যাসের এই দাম হত না।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে অভিষেক জানান, “সাংসদ ভবনে অধিবেশন শুরু হয় রাষ্ট্রপতির ভাষণ দিয়ে। সেই রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন না। দেশের নাম যারা উজ্জ্বল করেছে তারা আজ রাস্তায় বসে রয়েছে। ভাবছেন যা ইচ্ছে আমি করব আর মানুষ মেনে নেবে। একটা দেশের সংসদ ভবনের যদি উদ্বোধন হয় তাহলে রাষ্ট্রপতি থাকবে, বিরোধী দলনেতারা থাকবেন, সাংসদরা থাকবেন। মন্ত্রীরা থাকবেন। তা না করে আপনি ধর্মগুরুদের ডাকছেন। তাঁদের এখানে কী ভূমিকা তা বুঝতে পারলাম না।” দুর্নীতি দমনে কেন্দ্রের ভূমিকাকে পক্ষপাতদুষ্ট বলেও কটাক্ষ করেন অভিষেক। “যে টাকা নিয়েছে তাকে জেলে ঢোকাও। কিন্তু বিজেপি নেতাদের বেলায় কেন ব্যবস্থা নয়৷ তৃণমূলের সবাইকে জেলে ঢোকান, কংগ্রেসকে ঢোকান। কিন্তু বিজেপিকেও ঢোকান৷ তাহলে আমি আপনাকে স্যালুট করব৷ ওনার কাজে আর কথায় গুরুতর ফাঁক রয়েছে”, স্পষ্ট জানান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।