২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বিরোধী জোট গঠনের প্রস্তুতি। এবার সেই জোট-জল্পনাকে খানিকটা উসকে দিলেন উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতীশ কুমারদের মতো কেন্দ্রের ডাকা নীতি আয়োগের বৈঠকে গেলেন না তিনি। সরাসরি মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ না করলেও ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে শনিবারের বৈঠকে গরহাজির ছিলেন নবীন। যা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় কেন্দ্রের আঘাত-সহ একাধিক ইস্যুতে নীতি আয়োগের বিরোধিতার পথ প্রথম দেখান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দেখানো পথেই হাঁটেন আরও সাত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠক বয়কট করেন নীতীশ কুমার, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, অশোক গেহলট, এম কে স্ট্যালিন, সিদ্দারামাইয়া, ভগবন্ত সিং মান, পিনারাই বিজয়নরা। এ পর্যন্ত প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু এরপর জানা গেল ব্যস্ততার কারণে বৈঠকে থাকবেন না নবীন পট্টনায়েকও। যা নতুন করে গুঞ্জনের জন্ম দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কেন্দ্রের নীতি আয়োগ বৈঠক নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। এবারের বৈঠকে স্বাস্থ্য, মহিলাদের ক্ষমতায়ণ, পরিকাঠামো উন্নয়ন-সহ একাধিক বিষয়ে আলোচনার কথা রয়েছে৷ এছাড়াও ২০৪৭ সালের মধ্যে কীভাবে ভারতকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। বৈঠকের এজেন্ডাও দিল্লি তৈরি করেছে। সেগুলি মূলত মোদী সরকারের কর্মসূচি। এবারও যেমন পিএম গতিশক্তি, বিকশিত ভারত-২০৪৭, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশে কেন্দ্রের পরিকল্পনা আলোচ্য সূচিতে রয়েছে। অথচ, আগের যোজনা পরিষদ বা বর্তমান নীতি আয়োগের মূল ভাবনায় ছিল রাজ্যগুলিকেও সমানভাবে তাদের বক্তব্য তুলে ধরার সুযোগ দিতে হবে। সেই প্রক্রিয়া থেকে নীতি আয়োগ সরে গিয়েছে বলে অ-বিজেপি রাজ্যগুলি অভিযোগ জানিয়েছে। আগের যোজনা পরিষদের তুলনায় নীতি আয়োগের বহু ক্ষেত্রে মৌলিক ফারাকের একটি হল প্রতিষ্ঠানটি ক্রমে প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের প্রবীণ মুখ্যমন্ত্রীদের অনেকেই মনে করছেন, শুধু প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শোনার জন্য গোটা একটি দিন এবং সরকারি টাকা খরচের অর্থ হয় না। বাংলা-সহ একাধিক রাজ্যের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাবদ মোদী সরকার অ-বিজেপি রাজ্যগুলির প্রাপ্য আটকে দিয়েছে নানা অভিযোগ তুলে। রাজ্য সরকারগুলিতে সাজা দিতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে সুবিধা থেকে ক্রমাগত বঞ্চিত করছে কেন্দ্র।