রবিবার নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত সবার আগে ঘোষণা করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। অনুষ্ঠানের বাহাত্তর ঘণ্টা আগে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব আধ ডজন তির নিক্ষেপ করলেন। তৃণমূলের দাবি, ভারতের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক ভবনের (সংসদ) ভিতরে মোদীর জমানায় (২০১৪-২৩) এমন অনেক ‘সন্দেহজনক’ কাজ হয়েছে, যা এর আগে স্বাধীন ভারতে ঘটেনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আজ বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন দলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। তাঁর কথায়, ‘সংসদ তো নিছক একটা ভবন নয়। এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা পুরনো ঐতিহ্য, মূল্যবোধ, নিয়মকানুন মিলে গড়ে উঠেছে। ভারতের গণতন্ত্রের ভিত্তিভূমি সংসদ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেটা বোঝেন না। যদি বুঝতেন তা হলে কেনই বা তিনি গত ন’বছর ধরে সংসদের অবমাননা করতেন’? এর পরই ডেরেক ছ’টি উদাহরণ তুলে দাবি করেন যে, মোদী আসার আগে এমন অনিয়ম সংসদের ইতিহাসে কখনও হয়নি।
২০২১-এ পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে স্বপন দাশগুপ্ত তারকেশ্বর কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়ে হেরে যান। তার আগে তিনি রাজ্যসভায় মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। বিধানসভায় হেরে যাওয়ার পরে এক মাসের মাথায় ফের সংসদের উচ্চ কক্ষের মনোনীত সদস্য হয়েছিলেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকারের সুপারিশ অনুযায়ী রাজ্যসভায় মোট ১২ জনকে মনোনীত করেন রাষ্ট্রপতি। ডেরেক নাম না-করে জানিয়েছেন, ‘এই প্রথম বার এক ব্যক্তি একই মেয়াদকালে দু’বার নির্বাচিত হলেন। এই ঘটনা অভূতপূর্ব’।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে নতুন ভবন উদ্বোধনের ঠিক আগে তুলে আনা হয়েছে ২০২০ সালে ধ্বনি ভোটে কৃষি আইন রাজ্যসভায় পাশ করানোর প্রসঙ্গ। ডেরেকের কথায়, ‘অনেক সাংসদই সে দিন ভোটাভুটি চেয়েছিলেন। কিন্তু সমস্ত কানুনকে অগ্রাহ্য করে, অতীতের উদাহরণ অগ্রাহ্য করে সেই আবেদন মেনে নেওয়া হয়নি। অথচ সংসদীয় আইন অনুযায়ী যদি এক জন সাংসদও বিল পাশের সময়ে নিজের আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ভোটাভুটির দাবি করেন, রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বা লোকসভার স্পিকারকে বিষয়টি নিয়ে ভোট করাতে হয়’।