দিল্লী শ্রদ্ধা-কাণ্ডের নৃশংসতার রেশ এখনও দেশবাসীর স্মৃতি থেকে মুছে যায়নি। এর মধ্যেই ফের অভাবনীয় ভয়াবহতার সাক্ষী রইল ভারত। ৫৫ বছর বয়সী লিভ ইন সঙ্গীকে খুনের পর তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করার অভিযোগ উঠল ৪৮ বছরের এক প্রৌঢ়ের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি হায়দ্রাবাদের। ইতিমধ্যেই সেই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার নাম অনুরাধা রেড্ডি। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর গত ১৫ বছর ধরে তিনি বি চন্দ্র মোহন নামে ওই প্রেমিকের সঙ্গে তাঁর বাড়িতে থাকতেন। ওই বাড়ির ফ্রিজ থেকে উদ্ধার হয়েছে অনুরাধার হাত এবং পা। আর মাথা উদ্ধার হয়েছে মুসি নদী থেকে। প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহের অন্যান্য অংশও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বিভিন্ন জায়গায় রেখেছেন অভিযুক্ত। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তল্লাশির পরে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে জেরা করে জানা গিয়েছে, সঙ্গীর থেকে ৭ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিল ওই ব্যক্তি। সেই টাকা ফেরত দিতে না চেয়েই সঙ্গীকে খুন করে সে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার মুসি নদীর তীরে একটি কাটা মাথা উদ্ধার করে পুলিশ। টাকা ফেরত দিতে না পেরে প্রেমিকাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন মোহন। ঠিক দিল্লীর শ্রদ্ধা ওয়াকার এবং নিকি যাদবের খুনের মতোই অনুরাধাকে হত্যা করে তাঁর দেহাংশ কেটে ফ্রিজে রাখেন প্রেমিক। যে ভাবে শ্রদ্ধাকে হত্যা করতে ইন্টারনেটে খোঁজখবর করেছিলেন আফতাব, তেমনটা করেছেন মোহনও। পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে হায়দরাবাদের দিলসুখনগরে মোহনের বাড়িতে এই খুন হয় গত ১২ই মে। ওই দিন দু’জনের মধ্যে প্রচণ্ড ঝগড়া হয়। একটা সময় অনুরাধার বুকে ছুরি বসিয়ে দেন মোহন। তার পর পেটে ছুরি চালান। কিছু ক্ষণের মধ্যে মৃত্যু হয় অনুরাধার। এর পর প্রেমিকার দেহ টুকরো টুকরো করে কাটেন মোহন। তার জন্য দুটো ছোট পাথর কাটার মেশিন কিনে এনেছিলেন। মাথা কাটার পর সেটা নিয়ে অটোয় চড়ে মুসি নদীর ধারে চলে যান অভিযুক্ত। নদীতে কাটা মাথা ছুড়ে ফেলে আবার ঘরে ফেরেন। তার পর আবার সেই কাজ। সঙ্গিনীর হাত-পা কেটে একটি প্লাস্টিকে ঢেকে ঢুকিয়ে দেন ফ্রিজে। যাতে দুর্গন্ধ না বেরোয়, তার জন্য গোটা বাড়িতে প্রচুর সুগন্ধি ছড়ান। কী ভাবে দেহ নষ্ট করে ফেলা যায় তার জন্য গত কয়েক দিন ধরে সামাজিক মাধ্যমে এই সংক্রান্ত ভিডিয়ো দেখতেন মোহন। এই ঘটনার তদন্তে নেমে ওই বাড়ি এবং এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, জেরার মুখে নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত। এখন দেহের অন্যান্য অংশের সন্ধান চলছে। খুন-সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে মোহনের বিরুদ্ধে।