বুধবার চেন্নাইয়ে আইপিলের এলিমিনেটরে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে হারিয়ে দিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। ফলত দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে পৌঁছে গেল তারা। আগামী শুক্রবার হার্দিক পাণ্ডিয়ার গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে নামবেন রোহিতরা বুধবার প্রথমে ব্যাট করে রোহিতরা করেন ৮ উইকেটে ১৮২ রান। জবাবে লখনউয়ের ইনিংস শেষ হল ১০১ রানে। বুধবারের চেন্নাই দেখল দুই জোরে বোলারের দাপট। লখনউয়ের নবীন উল হককে অবশ্য ছাপিয়ে গেলেন মুম্বইয়ের আকাশ মাধওয়াল। মূলত তাঁর অনবদ্য বোলিংয়ের সামনে পর্যুদস্ত হল লখনউ। জয়ের জন্য ১৮৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় লখনউ। দুই ওপেনার প্রেরক মাঁকড় (৩) এবং কাইল মেয়ার্স (১৮) দলকে চাপে ফেলে দেন। তিন নম্বরে নেমে অধিনায়ক ক্রুণালও রান তোলার গতি বাড়াতে পারলেন না। বরং ১১ বলে ৮ রান করে দলের উপর চাপ আরও বাড়িয়ে দিলেন লখনউ অধিনায়ক। চার নম্বরে নেমে মার্কাস স্টোইনিস ব্যাট হাতে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন রোহিতদের। তিনি করলেন ২৭ বলে ৪০ রান। মারলেন ৫টি চার এবং ১টি ছক্কা। তাতে অবশ্য লাভ তেমন হয়নি। আয়ুষ বাদোনি (১), নিকোলাস পুরানদের (০) ব্যর্থতা লখনউয়ের চাপ আরও বাড়িয়ে দেয়। মুম্বইয়ের তরুণ ফাস্ট বোলার আকাশ। তাঁর বল খেলতেই পারলেন না লখনউয়ের ব্যাটাররা। ৭৪ রানে লখনউয়ের ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর মুম্বইয়ের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে যাওয়া ছিল কার্যত সময়ের অপেক্ষা।
উল্লেখ্য, এমন গুরুত্বপূর্ণ নকআউট ম্যাচে কুইন্টন ডিকককে কেন লখনউ বসিয়ে রাখল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। আকাশ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে জীবনের সেরা বোলিং করলেন লখনউয়ের বিরুদ্ধে। ৫ রান দিয়ে তুলে নিলেন ৫ উইকেট। ৭ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন ক্রিস জর্ডন। ২৮ রানে ১ উইকেট পীযূষ চাওলার। এদিন টস জিতে ব্যাটিং নেন রোহিত। শুরুটা ভাল করেও প্রত্যাশিত রান করতে পারেনি মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। রোহিত শর্মার দলের কোনও ব্যাটারই বড় রানের ইনিংস খেলতে পারেননি। মুম্বইয়ের রান তোলার গতি বার বার থমকে যায় লখনউয়ের বোলিং আক্রমণের সামনে। রোহিতদের অবশ্য আরও কম রানে থামাতে পারত ক্রুণালের দল। চেন্নাইয়ের মন্থর ২২ গজে লখনউয়ের এক জন কম স্পিনার নিয়ে খেলার পরিকল্পনা কিছুটা হলেও সুবিধা করে দেয় মুম্বইকে। রোহিত এবং ঈশান কিশন শুরু করেন আগ্রাসী মেজাজে। কিন্তু মুম্বইয়ের দুই ওপেনারই তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যান। রোহিত (১১) দ্রুত আউট হয়ে দলকে কিছুটা চাপে ফেলে দেন। তাঁকে আউট করেন লখনউয়ের আফগান জোরে বোলার নবীন। ঈশানকে (১৫) আউট করেন যশ ঠাকুর। তৃতীয় উইকেটের জুটিতে ক্যামরন গ্রিন এবং সূর্যকুমার যাদব দ্রুত রান তুলতে শুরু করেন। পাওয়ার প্লের সুবিধা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু মুম্বইয়ের শিবিরে আবার আঘাত হানেন নবীন। একই ওভারে আউট করেন গ্রিন (৪১) এবং সূর্যকুমারকে (৩৩)। গ্রিন মারলেন ৬টি চার এবং ১টি ছয়। সূর্যকুমারের ব্যাট থেকে এল ২টি করে চার এবং ছক্কা। ২ উইকেটে ১০৪ থেকে ৪ উইকেটে ১০৫ হয়ে যায় রোহিতদের ইনিংস। তিলক বর্মা (২৬), টিম ডেভিডরাও (১৩) চাপের মুখে দলকে ভরসা দিতে পারেননি। শেষ দিকে নেহাল ওয়াধেরার (১২ বলে ২৩) আগ্রাসী ব্যাটিং লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দেয় পাঁচ বারের আইপিএল চ্যাম্পিয়নদের। লখনউয়ের সফলতম বোলার নবীন। ৩৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিলেন তিনি। মুম্বইয়ের প্রথম সারির ব্যাটারদের উইকেট তিনিই তুলে নিলেন। ৩৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট যশের। মহসিন ২৪ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছেন।