কেটে গিয়েছে নয়-নয়টি বছর। নরেন্দ্র মোদীর আমলে বারবার ইতিহাসের বদলে যাওয়ার সাক্ষী থেকেছেন দেশের মানুষ। নাম বদল, পাঠ্যক্রম পরিবর্তন ইত্যাদি নানান উপায়ে নয়া ইতিহাস লিখতে ব্যস্ত মোদী ও তাঁর দল, এমনই অভিযোগ করে এসেছেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদরা। এবার ফের ঘটল তেমনই ঘটনা। বদলে গেল বহুপরিচিত মহেঞ্জোদারোর নর্তকীর মূর্তি। সিন্ধু সভ্যতার অন্যতম নিদর্শন এই নৃত্যরতা যুবতীর মূর্তিটি। ব্রোঞ্জ নির্মিত মুর্তিটির বয়স সাড়ে চার হাজার বছরেরও বেশি। ১৯২৬ সালে মহেঞ্জোদারোতে ধ্বংসাবশেষ খুঁড়ে সাড়ে দশ সেন্টিমিটার লম্বা ব্রোঞ্জের মূর্তিটি খুঁজে পেয়েছিলেন দয়ারাম সাহানি। সেই ঐতিহাসিক মূর্তিও রেহাই পেল না। কয়েকদিন আগে মিউজিয়াম দিবস উপলক্ষ্যে মোদী ইন্টারন্যাশনাল মিউজিয়াম এক্সপোর ম্যাসকট উদ্বোধন করেন। রাজধানীর প্রগতি ময়দানে এই এক্সপো চলছে।
প্রসঙ্গত, ভারত সরকারের সাংস্কৃতিক মন্ত্রকের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল, ওই ম্যাসকট সম্পর্কে স্টাইলিশড, কনটেম্পোরাইসড, লাইফ সাইজ ইত্যাদির মতো বিশেষণ ব্যবহার করছেন। কিন্তু আদপে দেখা যাচ্ছে, ম্যাসকটটি মহেঞ্জোদারোর নর্তকীর মূর্তি প্রতিরূপ। যা ন্যাশনাল মিউজিয়ামের ইন্দাস ভ্যালি সিভিলাইজেশন গ্যালারিতে অধিষ্ঠিত। কিন্তু মোদী সরকারের ম্যাসকট মহেঞ্জোদারোর নর্তকীর মূর্তির আদলে তৈরি হলেও, তার রূপ আমূল পাল্টে ফেলা হয়েছে। ব্রোঞ্জের কৃষ্ণ বর্ণের বদলে ফর্সা মানুষের গাত্র বর্ণদেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, তাতে মূর্তিটির রঙ হয়েছে গোলাপি। জামা কাপড় পরানো হয়েছে। সব মিলিয়ে সাড়ে চার হাজার বছরের ইতিহাস মুছে হাল আমলের রূপদান করা হয়েছে। এহেন ঘটনায় সরব হয়েছেন অনেকেই। উঠেছে প্রতিবাদের ঝড়। কবে দেশের সংগ্রহশালাগুলি ফের মুক্ত হবে, সেই নিয়ে ইতিহাস সচেতন নাগরিকরা ইতিমধ্যেই প্রমাদ গুনছেন।