মুখ্যমন্ত্রীর হিসেবে শপথ নেওয়ার পর বাংলার মানুষের জন্য একাধিক জনমুখী প্রকল্পের সূচনা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদের মধ্যে অন্যতম হল ‘কৃষকবন্ধু’। বাংলার সরকারের ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্প এখন দেশের অন্যান্য রাজ্যের কাছেও মডেল প্রকল্প হয়ে উঠেছে। ২০১৯ সালে ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্প চালু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৪ বছরে এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলার কৃষকদের হাতে মোট ১৭ হাজার কোটি টাকা তুলে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তারপর শুক্রবার ৩ লক্ষ কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরাসরি আর্থিক সহায়তা করল রাজ্য সরকার। এমনকী প্রায় ১০ হাজার প্রয়াত কৃষকের পরিবারকে এই প্রকল্পের অধীনে ২ লক্ষ টাকা করে সহায়তা প্রদান করেছে রাজ্য। কৃষকবন্ধু প্রকল্পে প্রত্যেক বছর ৪ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। এছাড়া কোনও কৃষক মারা গেলে তাঁর পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার প্রাক্কালে এমন সহায়তা পেয়ে খুশি কৃষক পরিবারগুলি। তাছাড়া যে কোনও সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসতে পারে। তখন বিপদে পড়ে যাবে কৃষক পরিবারগুলি। এছাড়া সারের দামও বেড়ে গিয়েছে। তাই চাষ করতে বেশ চাপেই আছে বাংলার চাষীরা। এইসব নানা দিক বিচার করে ফের কৃষকদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল সরকার।
পাশাপাশি, নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে যে গত ২৬শে এপ্রিল প্রায় ৯৩ লক্ষ কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রকল্পের টাকা পাঠিয়েছিল রাজ্য সরকার। তারপরেও আরও কিছু কৃষকের নাম সংযুক্ত হয়। শুক্রবার তাঁদেরকেই মোট ৯৩.৫১ কোটি টাকা পাঠানো হয়েছে। আবার ৭ হাজার ২৭৪ জন কৃষকের পরিবারকে মোট ১৫৫ কোটি টাকা পাঠানো হয়েছে। এই ধাপে মোট প্রায় ২৫০ কোটি টাকার সহায়তা প্রদান করা হল। গত ২৬ এপ্রিল এরকম ২ হাজার ৭১২টি পরিবারকে ৫৪ কোটি টাকার সহায়তা প্রদান করেছিল রাজ্য। রাজ্যের কৃষি দফতর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই অধিকাংশ জায়গায় বোরো ধান কাটার কাজ শেষ হয়েছে। মোট চাষ হওয়া ১২.৮৬ লক্ষ হেক্টর জমির মধ্যে ধান কাটার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে ১১.৬০ লক্ষ হেক্টর জমিতে। কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই প্রকল্প মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত। বাংলার কৃষকরা যাতে সুরক্ষিত থাকে, তাই আমাদের লাগাতার চেষ্টা চলছে।” রাজ্যে কৃষিক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি বিশেষত কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার ব্যবহারের জন্যই দ্রুত এই কাজ সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।