কর্ণাটক জয়ের পর থেকেই এই টানাপড়েন চলছিল, যে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সি সিদ্দারামাইয়া ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমারের মধ্যে কে বসবেন মুখ্যমন্ত্রী চেয়ারে। অবশেষে রফাসূত্র বের করে সিদ্দাকে মুখ্যমন্ত্রী ও শিবকুমারকে উপমুখ্যমন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত নেয় কংগ্রেস। শনিবার বেঙ্গালুরুতে উপচে পড়া কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে সেই শপথগ্রহণের মঞ্চে সিদ্দা-শিবের হাত ধরিয়ে ঐক্যের ফ্রেম তৈরি করে দিলেন রাহুল গান্ধী। এদিন কর্ণাটকের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথগ্রহণ করলেন সিদ্দারামাইয়া। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হলেন কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা। অন্যদিকে, রাজ্যপাল থাবরচন্দ গহলৌতের কাছে উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন শিবকুমারও।
সিদ্দা এবং শিবকুমারের পাশাপাশি, শনিবার শপথ নিয়েছেন একাধিক পূর্ণমন্ত্রী। সেই তালিকায় উল্লেখযোগ্য নাম কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের ছেলে প্রিয়ঙ্ক। প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জি পরমেশ্বর শুক্রবার পর্যন্ত উপমুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিতে অনড় ছিলেন। শনিবার মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন প্রভাবশালী এই দলিত নেতা। বাল্মিকী জনগোষ্ঠীর নেতা সতীশ ঝারখিয়োলিও মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন। পাঁচ বারের বিধায়ক তথা প্রভাবশালী লিঙ্গায়েত নেতা এমবি পাতিল, মনমোহন সিংহের জমানার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কেএইচ মুনিয়াপ্পা, দলের সংখ্যালঘু নেতা জামির আহমেদ খান এবং কেজে জর্জও মন্ত্রিপদে শপথ নিয়েছেন শনিবার। পূর্ণমন্ত্রী হয়েছেন প্রবীণ নেতা রামলিঙ্গ রেড্ডিও।
এদিন, কংগ্রেস সভাপতি খাড়গের পাশাপাশি, রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এবং কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা হাজির ছিলেন শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে। তবে ছিলেন না সোনিয়া। কংগ্রেসের সহযোগী দলগুলির মধ্যে এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদের ছেলে তথা বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেএমএম প্রধান হেমন্ত সোরেন, সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআইয়ের ডি রাজা এবং কাশ্মীরের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী— ন্যাশনাল কনফারেন্সের ফারুক আবদুল্লা এবং পিডিপির মেহবুবা মুফতিও হাজির ছিলেন সিদ্দার শপথে।
অন্যদিকে, কংগ্রেসের তরফে আমন্ত্রণ জানানো হলেও এদিন কান্তিরাভায় যেতে পারেননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পরিবর্তে তৃণমূলের তরফে হাজির ছিলেন সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। এদিকে, মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের জোট শরিক উদ্ধব ঠাকরেও অনুপস্থিত ছিলেন শপথে। পরিবর্তে শিবসেনা (বালাসাহেব) প্রধান তাঁর প্রতিনিধিকে পাঠিয়েছিলেন শপথে। আবার, প্রখ্যাত দক্ষিণী অভিনেতা কমল হাসানও ছিলেন শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের মঞ্চে। বরাবরই কমল হাসান বিজেপি ও হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির তীব্র সমালোচক। তাঁকে রাহুল গান্ধীর ভারতজোড়ো যাত্রাতেও দেখা গিয়েছিল।