মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকেই বাংলার যুব ও তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিদের স্বনির্ভর করে তোলার উপর জোর দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চাকরির প্রস্তুতির পাশাপাশি জোর দিতে বলেছেন ব্যবসার উপর। অনেকের তাতে সায়ও আছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, ব্যবসা শুরুর টাকা বা পুঁজি কিংবা মূলধন অনেকেই জোগাড় করে উঠতে পারেন না। তাই তাঁরা ব্যবসা শুরুও করতে পারেন না। এই অবস্থায় এদেরকেই সাহায্য করতে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। রাজ্য সরকার আনছে নতুন স্টার্ট আপ পলিসি। সেই নীতির ওপর ভর দিয়েই সম্ভাবনাময় নতুন প্রতিষ্ঠানগুলির হাতে সহজ শর্তে টাকার জোগান নিশ্চিত করতে চলেছে রাজ্য সরকার। প্রাথমিকভাবে ২৫০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের পরিকল্পনা হয়েছে। নবান্ন সূত্র অনুযায়ী, এর মধ্যে ২০০ কোটি টাকা ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড হিসেবে ব্যবহার করা হবে। রাজ্যের অর্থ দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বাংলার তরুণ ও যুব প্রজন্মকে ব্যবসার মাধ্যমে সাবলম্বী করে তুলতে ও সেই সব ব্যবসার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলতেই রাজ্য সরকার নতুন এই উদ্যোগ নিয়েছে। এমন নীতিতে ভর করেই আগামী কয়েক বছরের মধ্যে শুরু হওয়া সম্ভাবনাময় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে সরাসরি টাকা বিনিয়োগ করবে রাজ্য। ফলে ওই সংস্থার নির্দিষ্ট অংশীদারিত্বও থাকবে রাজ্যের হাতে। বাকি ৫০ কোটি টাকা এমন সম্ভাবনাময় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য রাখা হচ্ছে, যেগুলি শুরু হতে চলেছে অবিলম্বেই।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজ্যের এই নয়া উদ্যোগ নিয়ে নবান্নে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানে ছিলেন রাজ্যের অর্থদফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, ক্ষুদ্রশিল্প দফতরের প্রধান সচিব রাজেশ পান্ডে সহ অন্যান্যরা। এই প্রকল্পের জন্য কত টাকা প্রয়োজন, কবে থেকে চালু করা সম্ভব ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। একই সঙ্গে জানা গিয়েছে, আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি ব্যবসার সামগ্রিক পরিকাঠামো গড়তেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে চায় রাজ্য সরকার। তার জন্য বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গিয়েছে ভবিষৎ ক্রেডিট কার্ড। এই প্রকল্পের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম উপকৃত হবেন। তবে নতুন যে প্রকল্প চালুর কথা ভাবা হচ্ছে সেখানে আরও বেশি অঙ্কের আর্থিক সহায়তা পাওয়া সম্ভব। ব্যবসায় আগ্রহী লোকজনের সব থেকে বেশি দুশ্চিম্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় মূলধনের জোগান ঠিক রাখা। নতুন উদ্যোগের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পেতেও সমস্যা হয়। এসব কারণে অনেক ক্ষেত্রে শুরুতেই মাঠে মারা যায় ব্যবসার স্বপ্ন। কেউ কেউ পরিবার, বন্ধুবান্ধব বা অন্য কোনও ব্যবসায়ীর থেকে টাকা সংগ্রহ করে কাজ চালান কোনওরকমে। রাজ্য সরকারের এই প্রকল্প এসে গেলে বহু তরুণ-তরুণী মূলধনের জোগানের ব্যাপারে নিশ্চয়তা পাবেন এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হয়ে উঠবেন, এমনই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। আশাবাদী সরকারি কর্মকর্তারাও।