কেন্দ্রীয় এজেন্সি ডাকলে অবশ্যই সহযোগিতা করবেন তিনি, কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ বা সুপ্রিম কোর্টের পথও তাঁর সামনে খোলা আছে। স্পষ্টত এমনই জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কুন্তল ঘোষ ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখোমুখি বসিয়ে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করুক, এমনই নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই মামলা সুপ্রিম কোর্ট ঘুরে হাইকোর্টে বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে আসে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি সিনহা আগের নির্দেশ বহাল রাখার পাশাপাশি অভিষেক ও কুন্তলকে ২৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে অভিষেক কোনও রক্ষাকবচ পাননি। তারপর পশ্চিম বর্ধমান থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বিকেল চারটে পর্যন্ত সার্ভার বিভ্রাটের জন্য বিচারপতি সিনহার যে রায় তা নির্দেশনামা আকারে হাইকোর্টের ওয়েবসাইটে আপলোড হয়নি। অভিষেক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “আমি এখনও রায়ের কপি হাতে পাইনি। পেলে ডিভিশন বেঞ্চ বা সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার বিষয় ভাবব। একজন নাগরিক হিসাবে সেই রাস্তা আমার সামনে খোলা আছে। তদন্ত এজেন্সিকে আমি সবসময় সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। যদি আমায় সমন পাঠানো হয় তাহলে দরকারে আমি জনসংযোগ যাত্রা একদিন থামিয়ে আমি তদন্তে সাহায্য করে আসব।”
প্রসঙ্ত, গত ২৯শে মার্চ শহিদ মিনারের সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, সেই সারদা মামলার সময় থেকে কেন্দ্রীয় এজেন্সি তাঁকে টার্গেট করে আসছে। মদন মিত্র, কুণাল ঘোষদের চাপ দেওয়া হয়েছিল তাঁর নাম বলানোর জন্য। কাকতালীয় হল, ঠিক তার পরের দিনই কুন্তল ঘোষকে যখন আদালতে তোলা হচ্ছিল তখন তিনি দাবি করেন, জেলের ভিতর তাঁর উপর চাপ দিচ্ছে ইডি-সিবিআই। অভিষেকের নাম বলাতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। এরপর কুন্তল এ নিয়ে চিঠি লেখেন আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক অর্পণ চক্রবর্তী ও হেস্টিংস থানাকে। তার ভিত্তিতেই দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, “আমি তো আকাশ থেকে অভিষেকের নাম পেড়ে আনিনি। ওঁর নাম তো কুন্তল ঘোষ নিজে বলেছিলেন। আপনারা কী বলতে চাইছেন? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলে কেউ নেই?” অভিষেক এদিন এও বলেন, তিনি দিল্লীতে হাজিরা দিয়ে এসেছেন ইডির কাছে। কিন্তু বারবার যখন দিল্লীতে ডাকা হচ্ছিল তখন সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানান, তাঁকে কলকাতায় ডাকা হোক। শীর্ষ আদালত তাতেই সায় দেয়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারপর কলকাতার ইডি দফতরেও তিনি হাজিরা দিয়েছেন। “আমরা পালিয়ে যাওয়ার লোক নই। মাথা উঁচু করে থাকা লোক। তদন্তের মুখোমুখি হতে আমরা ভয় পাই না”, সাফ বক্তব্য তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ডের।