মণিপুরের সাম্প্রতিক জাতিদাঙ্গার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের ভূমিকা নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছিল। পরিস্থিতি ভয়ানক দিকে যাচ্ছে জেনেও তিনি যথাসময়ে দিল্লিকে অবহিত করেননি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য চাননি বলে অভিযোগ ওঠে দলেই। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছিল যে বিভিন্ন রাজ্য থেকে বিমানে সেনা, আধা সেনা পাঠাতে হয় রাজ্যে।
রাজ্যের পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর আরও গভীরে ময়না তদন্ত শুরু হয়েছে মণিপুর নিয়ে এরই মধ্যে বীরেন সরকারের দুই মন্ত্রী-সহ রাজ্যের ১০জন বিধায়ক দিল্লিতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে দাবি জানিয়ে এসেছেন, বর্তমান সরকারের উপর তাদের আস্থা চলে গিয়েছে। সরকারের বদল চাই। অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি থেকে এন বীরেন সিংহের অপসারণ দাবি করেছেন তাঁরা। ওই দলে দু’জন নির্দল বিধায়কও ছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেওয়া স্মারকপত্রে তাঁরা খোলাখুলি রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বিজেপি সূত্রেও খবর, মণিপুরের পরিস্থিতি যে দিকে গড়িয়েছে তাতে সেখানে কুকি-সহ অন্য জনজাতিদের পৃথক রাজ্যের দাবি নিয়ে আন্দোলন থামিয়ে আপাতত শান্তি ফেরাতে হলে মইতেই সম্প্রদায়ের মুখ বীরেনকে সরানো ছাড়া উপায় নেই। মণিপুরের গোলমালের মূলে রয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠ মইতেইদের তফসিলি উপজাতি হিসাবে হাইকোর্টের স্বীকৃতি।
এদিকে, সুপ্রিম কোর্টও মণিপুর হাইকোর্টের সেই বিচারপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে বলে আদালত সূত্রের খবর। গত ১৮ এপ্রিল মণিপুর হাই কোর্টের বিচারপতি এমভি মুরলিধরন মইতেইদের তফসিলি উপজাতি হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে রাজ্য সরকারকে উদ্যোগী হতে বলেন। বুধবার সুপ্রিম কোর্টে এই সংক্রান্ত মামলায় প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় স্পষ্ট জানান, ওই রায় সম্পূর্ণভাবে আইন বিরুদ্ধ। সংশ্লিষ্ট বিচারপতি শুধু ভুল করেননি, তিনি এক্তিয়ার অতিক্রম করেছেন। তফসিলি জাতি হিসাবে স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টি সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকার মারফত রাষ্ট্রপতির হাতে রয়েছে।