কড়া পদক্ষেপের পথে হাঁটল কলকাতা পুরসভা এবার লাইটপোস্টের তার থেকে বিদ্যুৎ চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লেই খুনের মামলা রুজু করবে পুলিশ। বুধবার পুরসভায় এমন বার্তা দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বিদ্যুৎ চুরি করতে গিয়ে বিপজ্জনক ভাবে তার খুলে রাখছে জালিয়াতরা। সেই তার শরীরের সংস্পর্শে আসতেই ঘটছে দুর্ঘটনা। রবিবার একবালপুর থানা এলাকার একবালপুর লেনে বাড়ির সামনে থাকা লোহার তারে ভেজা জামাকাপড় মেলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারান তিন জন। সূত্রের খবর, সে মৃত্যুর নেপথ্যে রয়েছে হুকিং। গ্রেফতার হয়েছে দু’জন। সলমন আহমেদ সিদ্দিকি আর মহম্মদ শাকিলের বিরুদ্ধে ইলেকট্রিসিটি অ্যাক্টে মামলা রুজু হয়েছে। অন্যদিকে বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগে গার্ডেনরিচ থেকে পলাতক তিন অভিযুক্ত শাহবাজ, ইউসুফ, তাজ মহম্মদ। ওয়াটগঞ্জে বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগ উঠেছে গাজালা সুবিয়া নামে এক মহিলার বিরুদ্ধে। আপাতত পলাতক সেও। এই প্রথম নয়, ২০২১ সালে হুকিং করতে কলকাতার জোকায় মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। ওই বছরই রাজভবনের সামনে তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু হয় আরও এক যুবকের। সে ক্ষেত্রেও দেখা যায়, খোলা তারের কারণ, হুকিং করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, বুধবার কলকাতা পুরসভায় মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, হুকিংয়ের কারণে শহরের একাধিক এলাকা বিপজ্জনক। মৃত্যু হচ্ছে অনেকের। এবার থেকে যে বা যারা হুকিং করবে তাদের বিরুদ্ধে সিইএসসি ৩০৭ এফআইআর করবে। হুকিংয়ের কারণে যেহেতু মৃত্যু হচ্ছে তাই খুনের মামলা রুজু করবে কলকাতা পুলিশ। জামিন হবে না সহজে। মেয়রের কথায়, ‘‘যাঁরা বিদ্যুৎ চুরি করছেন। তাঁদের জন্য একের পর এক মৃত্যু হচ্ছে। ফলে তাঁদের উপর খুনের মামলা যাতে দেওয়া যায় সেটা দেখা হবে।’’ এদিন কলকাতা পুরসভায় সিইএসসি, ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকট্রিসিটি বোর্ড, কলকাতা পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করে পুরসভা। বৈঠকে হাজির ছিলেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, মেয়র ফিরহাদ হাকিম, পুর কমিশনার বিনোদ কুমার। বৈঠক শেষে মেয়র জানিয়েছেন, শহরের কোন কোন এলাকায় বিদ্যুৎ চুরি হচ্ছে সিইএসসির কাছে তার তালিকা রয়েছে। তৈরি হয়েছে একটি যৌথ টিম। যে টিমে রয়েছে সিইএসসি, পুরসভার লাইটিং বিভাগের আধিকারিক এবং কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা। যে সমস্ত এলাকায় বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগ সর্বাধিক সেখানে হানা দেবে এই টিম। খতিয়ে দেখবে শহরের বাতিস্তম্ভগুলো। পুলিশ কমিশনারের তরফে প্রতিটি থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নিজের এলাকায় বিদ্যুৎ চুরি হচ্ছে কি না তা দেখার জন্য। সূত্র জানিয়েছে, বর্ষায় কলকাতার প্রতিটি ত্রিফলা আলো বন্ধ রাখা হবে। জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই বন্ধ রাখা হবে ত্রিফলা। এই আলোগুলোর উচ্চতা কম, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলেই এমন চিন্তাভাবনা। যদিও মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, বিশেষ কোনও বাতি নয়। যেখানে যেখানে বিপজ্জনকভাবে তার বেরিয়ে রয়েছে, বন্ধ রেখে মেরামত করা হবে সেই বাতিস্তম্ভগুলি।