১৯৮১ সালের ১৭ মে দিল্লিতে ভারত সরকারের আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনা ঢাকায় ফিরেছিলেন। বুধবার, ১৭ মে বাংলাদেশের শাসক দল আওয়ামী লিগ ‘হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন’ দিবস পালন করছে। তাঁর এবং দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেই দিনটির প্রাক্কালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। বিবিসি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘আমেরিকা আমাকে বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়। তারা চায় না আমাদের দেশে উন্নয়ন অব্যাহত থাকুক। তাই মানবাধিকারহরণ, গণতন্ত্র বিপন্নতার কথা বলে বিশ্বব্যাপী প্রচার শুরু করেছে।’
হাসিনা ক’দিন আগেই বিশ্ব ব্যাঙ্কের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের পঞ্চাশ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। সেখানেও তিনি বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের নানা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হন। এমনকী অন্যদেশের ছিদ্রান্বেষণ না করে নিজের চরকায় তেল দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন মার্কিন কর্তা-ব্যক্তিদের। স্কুলে, শপিং মলে, পথেঘাটে বন্দুকবাজের হামলায় মানুষ হত্যা এবং পুলিশের হাতে প্রতিবাদী বিক্ষোভকারীদের খুনের ঘটনা তুলে ধরে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘এসব পৃথিবীর কোন দেশে হয়? আমেরিকার উচিত নিজের দেশের নাগরিকদের রক্ষা করার ব্যাপারে আরও যত্নশীল হওয়া।’
গত মাসে বাংলাদেশ সংসদের ভাষণেও তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমেরিকা বাংলাদেশে ক্ষমতায় পরিবর্তন আনতে চায়।’ বিবিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই প্রসঙ্গেই বিস্তারিত বলেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লিগ সভানেত্রী হাসিনা। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী র্যাবের উপর আমেরিকা কেন নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে। জবাবে হাসিনা বলেন, ২০০৪ সালে আমেরিকার পরামর্শেই ওই বাহিনী তৈরি হয়। তারাই ওদের প্রশিক্ষণ এবং সরঞ্জাম দেয়। সেই বাহিনী যদি ভুল করে থাকে তাহলে আমেরিকাও দায় অস্বীকার করতে পারে না। তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা কেন?
এরপরই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জোরালো অভিযোগ করে বলেন, ‘আসলে আমেরিকা চায় না আমি ক্ষমতায় থাকি। আমার সময়ে যে উন্নয়ন হয়েছে সেটা তারা মানতে পারছে না। তাই নিষেধাজ্ঞা আরোপের কৌশল নিয়েছে।’ প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রশাসন গত বছর অক্টোবরে বাংলাদেশের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আমেরিকা সফরের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কয়েকজন প্রাক্তন সেনাকর্তার বিরুদ্ধেও একই নির্দেশ আরোপ করে তারা। অভিযোগ, ওই কর্মকর্তাদের নির্দেশেই বাংলাদেশে গুম খুন, অপহরণ চলছে। বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে।