‘মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়।’ এ যাবৎ ওই বীজমন্ত্র জপ করেই ভোট বৈতরণী পার হয়ে এসেছে বিজেপি। কিন্তু হিমাচল প্রদেশের পরে ছ’মাসের মধ্যে কর্ণাটকে হার! কংগ্রেসের বক্তব্য, দুই রাজ্যে ভোটের ফলেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে আদৌ অজেয় নন নরেন্দ্র মোদী। মানুষ ঘুরে দাঁড়ালে পরাজয় স্বীকার করে নিতে হয় তাঁকেও। কিন্তু গত কাল হারের পর থেকেই বিজেপি প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি রক্ষায় যাবতীয় দায় মূলত রাজ্য নেতৃত্বের দিকে ঠেলে দেওয়ার যে কৌশল নিয়েছে তার সমালোচনা করে সরব হয়েছে কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, রাত দিন এক করে পড়ে থেকে কর্নাটকে দলকে জেতাতে পারেননি মোদী। সেই হারের দায় প্রধানমন্ত্রীকেই নিতে হবে।
গত কাল দলের বিপর্যয় স্পষ্ট হতেই প্রধানমন্ত্রীর উপরে যাতে হারের দায় না বর্তায় সে জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠেন বিজেপি নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই জানিয়ে দিয়েছেন, ওই পরাজয়ের জন্য তিনি দায়ী। ঠিক কোন কারণগুলির জন্য দল হেরেছে তা পর্যালোচনা করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। অথচ প্রতিষ্ঠান-বিরোধী হাওয়ার কারণে মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তন, ভোটের আগে হিন্দুত্ব ও জাতীয়তাবাদের তাস খেলা, বজরংবলী থেকে হিজাব বিতর্ক-মেরুকরণের জন্য এ হেন কোনও পন্থা নিতে পিছপা হননি নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। কিন্তু ভোটের ফলেই স্পষ্ট মাটি কামড়ে নরেন্দ্র মোদী কর্নাটকে পড়ে থাকলেও, মানুষের মন জয় করতে পারেননি তিনি। উল্টে টানা এক মাস ধরে প্রধানমন্ত্রীর প্রচার চালানো সত্ত্বেও তাঁর দলকে ক্ষমতার কুর্সি থেকে টেনে নামিয়েছেন কর্নাটকের মানুষ।
সামনেই আরও চারটি বড় রাজ্যে নির্বাচন। তার পরে লোকসভা নির্বাচন। জিতলে প্রধানমন্ত্রীর কৃতিত্ব আর হারলে দোষ দলের-এই তত্ত্ব মেনেই প্রধানমন্ত্রীর অপরাজেয় ভাবমূর্তি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে জন্য পরিকল্পিত ভাবে তৎপর হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মাও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এই হারের পিছনে প্রধানমন্ত্রীর কোনও ভূমিকা নেই। তাঁর কথায়, ‘বিগত কয়েক মাস ধরে আসা সমীক্ষাগুলিই স্পষ্ট করে দিচ্ছিল রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসতে চলেছে। বাস্তবেও তাই হয়েছে।’ কেন্দ্রীয় নেতা তথা বিধানসভায় পরাজিত বিজেপির সি টি রবির কথায়, ‘ওই হারের দায় দলের নয়। দায় আমাদের।’ রবির কথা থেকেই স্পষ্ট হারের যাবতীয় দায় রাজ্য নেতৃত্ব নিতে প্রস্তুত।