কর্ণাটকে শোচনীয় ভরাডুবির সঙ্গে সঙ্গে পুরো দাক্ষিণাত্যে থেকেই মুছে গিয়েছে বিজেপি। দক্ষিণ ভারতের একটি রাজ্যই হাতে এসেছিল পদ্মশিবিরের। সেই রাজ্যে গদি ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল তারা। একুশের ভোটে বাংলায় যেভাবে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বিজেপি, সেই একই কায়দায় তাঁরা প্রচার চালিয়েছিল কন্নড়ভূমেও। পদ্মশিবিরের ৫ মহারথী সেখানে ভোট প্রচারে গিয়ে ১ মাসের মধ্যে করেছিলেন মোট ৬৯টি সভা, ৪১টি রোড-শো। কিন্তু তারপরেও জয়ের মুখ দেখতে পারল না তারা। বদলে গেল দেশের রাজনৈতিক মানচিত্রও। দেশের বুকে এখন ক্রমশ কোণঠাসা হচ্ছে গেরুয়া-পার্টি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, তথ্য ও পরিসংখ্যান অনুযায়ী কর্ণাটকের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে জেতাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী করেছেন ১৯টি সভা ও ৬টি রোড শো। বিজেপির সেকেন্ড ইন কম্যান্ড তথা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ করেছেন ১৬টি সভা ও ১৫টি রোড শো। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা করেছেন ১০টি সভা ও ১৬টি রোড শো। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ করেছেন ৯টি সভা ও ৩টি রোড শো। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা করেছেন ১৫টি সভা ও ১টি রোড শো। কিন্তু এত কিছু করেও লাভ হল না। ৭ অঙ্কের ঘরেও পা রাখতে পারেনি বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা! অথচ পদ্মশিবিরের সবাই বেশ জোর গলায় দাবি করেছিলেন, বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সেখানে সরকার গড়বে। কিন্তু বাস্তব তুলে ধরল পুরো ভিন্ন চিত্র। দেশ থেকে আরও একটি রাজ্য থেকে ধুয়ে মুছে গেল বিজেপির শাসন। মানচিত্রে চোখ রাখলে দেখা যাচ্ছে, দেশের মধ্যে ১৫টি রাজ্যে এখন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে গেরুয়া শাসন চলছে। কিন্তু হিমাচল প্রদেশ, পাঞ্জাব, দিল্লী, রাজস্থান, কেরল, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা, ছত্তিশগড়, উড়িষ্যা, ঝাড়খণ্ড, বিহার ও বাংলায় নেই গেরুয়া রাজত্ব। এই ১৪টি রাজ্যে কার্যত গেরুয়া-বিরোধী মানসিকতা তুঙ্গে। দেশের ৪৩ শতাংশ এলাকা রয়েছে গেরুয়ার অধীনে, ৫৭ শতাংশ এলাকা রয়েছে বিরোধীদের দখলে। দেশের জনতার ৪৪ শতাংশ রয়েছেন গেরুয়ার শাসনে, ৫৬ শতাংশ রয়েছে বিরোধীদের শাসনে। সময় যতই গড়াবে ততই কিন্তু পাল্লা ভারী হবে বিরোধীদের। বিজেপির হাত থেকে আরও জমি হাতছাড়া হবে বলেই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা।