শনিবার সকাল থেকেই কর্ণাটকে শুরু হয়ে গিয়েছে ভোট গণনা পর্ব। ফলের প্রবণতা থেকেই স্পষ্ট দক্ষিণের এই রাজ্যে ফিকে মোদী ম্যাজিক। বদলে উঠেছে সবুজ ঝড়। যা কংগ্রেসের জন্য স্বস্তির বাতাস বয়ে এনেছে। তাদের সরকার গঠন আর মাত্র সময়ের অপেক্ষা। শুধু তাই নয়, কংগ্রেসের এই জয়ের ফলে পদ্মশূন্য হতে চলেছে গোটা দক্ষিণ ভারতই।
দক্ষিণ ভারতের পাঁচ রাজ্য— অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, কেরল, তামিলনাড়ু এবং তেলঙ্গানার মধ্যে শুধুমাত্র কর্ণাটকে ক্ষমতায় ছিল বিজেপি। আর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচেরিতে সরকারে রয়েছে বিজেপি সমর্থিত এনআর কংগ্রেস। তাই কর্ণাটক ছিল মোদী-শাহদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ভোটপ্রচারে বার বার কর্ণাটকে সভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। হিন্দুত্বের প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে হিন্দু অধ্যুষিত কর্ণাটকে মোদী-কণ্ঠে বার বার ধ্বনিত হয়েছে রাষ্ট্রপ্রেম এবং জাতীয়তাবাদের কথা।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক অতীতে কর্ণাটকে বড় কোনও সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা নেই। তবে সেখানের রাজনীতিতে হিন্দুদের দুটি প্রধান সম্প্রদায়, লিঙ্গায়েত এবং ভোক্কালিগাদের দ্বন্দ্ব বরাবরই প্রকট। সেদিকে নজর ছিল বিজেপির। লিঙ্গায়েতদের কিছুটা সমর্থন বিজেপির পক্ষে ছিলই। কিন্তু ভোক্কালিগাদের মধ্যে বিজেপির প্রভাব বেশ কম।
ভোটের প্রচারে হিন্দুত্বের তাস না খেললেও হিন্দুত্ববাদীদের মন পেতে চেষ্টার কসুর করেনি বিজেপি। তার বড় উদাহরণ হল গত বছরের হিজাব-বিরোধী আন্দোলন। তাতে করতে হয়েছে আদালতকে। এবং শেষ পর্যন্ত কর্নাটকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিষিদ্ধ হয়।
শুধু তাই নয়, কর্ণাটকে হালাল মাংস বিক্রি নিষিদ্ধের দাবিতে ২০২২ সালে শোরগোল শুরু হয়। শ্রীরাম সেনা, বজরং দল, হিন্দু জাগরণ বেদিকের মতো হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের দাবির পর কর্নাটক বিধানসভায় বিল আনারও প্রস্তুতি নেয় বিজেপি সরকার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যে কাজ করল না ‘মোদী-ম্যাজিক’।